কলকাতা : সময়ের আগেই শিশুর জন্ম - বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন প্রায় সব সন্তানসম্ভবাই। সময়ের আগেই যদি কোনও কারণে, শিশুকে ভূমিষ্ঠ করাতে হয়, তাহলে তার সম্পূর্ণ বিকাশ হয় না। তাই প্রি-টার্ম বার্থ নিয়ে আশঙ্কায় থাকেন প্রায় সব হবু মা-ই।  গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগে যে বাচ্চার জন্ম হয়, তাদেরই প্রিম্যাচিওর বেবি (Premature Baby ) বলা হয়ে থাকে। 



 যদি শারীরিক কোনও অসুবিধের কারণে একজন মা তার গর্ভে সন্তানকে ৪০ সপ্তাহ না রাখতে পারেন, তার আগেই ডেলিভারি করাতে হয়, বিশেষত  সপ্তাহ তিনেক আগেই, তাহলে তাকে প্রি-টার্ম বার্থ বলা হয়। ও শিশুকে প্রিম্যাচিয়র বেবি বলা হয়। 


Pre-mature শিশুদের মধ্যে কয়েকটি ভাগ আছে।



  • ৩৪ থেকে ৩৬ সপ্তাহ সম্পূর্ণ করে জন্মায় যারা , তারা লেট প্রি ম্যাচিওর বেবি (Late preterm 

  • ৩২ থেকে ৩৪ সপ্তাহের মধ্যে জন্মালে সেই শিশুকে বলা হবে মডারেট প্রিম্যাচিওর বেবি (Moderately preterm 

  • ৩২ সপ্তাহ মাতৃগর্ভে পূরণ করার আগেই জন্মালে , তাকে বলে ভেরি প্রি ম্যাচিওর (Very preterm) বেবি। 

  • যারা ২৫ সপ্তাহের আগে জন্ম নিলে তাদের এক্সট্রিম প্রি ম্যাচিওর (Extremely preterm)  বেবি বলে



কোন মায়েদের অকাল প্রসবের ঝুঁকিতে থাকে ?



  • সব মহিলাদের প্রি-টার্ম বেবি জন্ম দেওয়ার ঝুঁকি সমান নয়। কারও কারও ক্ষেত্রে এই আশঙ্কাটা বেশি। আলোচনায়  চিকিৎসক অরুণা তাঁতিয়া (স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, কর্ণধার, ILS হাসপাতাল) । 

  • যাঁদের গর্ভে একাধিক সন্তান রয়েছে।

  •  আগেও যদি অকাল প্রসবের ঘটনা ঘটে থাকে।

  • অ্যামিনিয়টিক স্যাকে সংক্রমণ ঘটলে (fluid-filled membranous sac called the amniotic sac ) তরল বের হতে শুরু করলে, অকালে শিশুর প্রসব করাতে হতে পারে

  • উচ্চ রক্তচাপের ফলে অনেক সময় জটিল গর্ভাবস্থা তৈরি হয়। তখন দ্রুত ডেলিভারির প্রয়োজন পড়ে।

  • মা যদি ডায়াবেটিক হন, তাহলে প্রি-টার্ম বার্থের ঝুঁকি থাকে।

  •  জরায়ু বা গর্ভাশয়ের মুখে কোনও সমস্যা থাকলে, তা ধারণ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়।

  •  জরায়ুর কোনও সমস্যা থাকলে আশঙ্কা বাড়ে।

  •  মূত্রনালীর সংক্রমণ বা UTI হলে সমস্যা বাড়ে।

  •  পেটে আঘাত বা প্ল্যাসেন্টার ক্ষতি হলে সমস্যা বাড়বে।

  •  IVF এর  দ্বারা গর্ভধারণ করলেও সময়ের আগে প্রসবের সম্ভাবনা থাকে।

  •  ধূমপান বা মাদকদ্রব্যে লিপ্ত হলে হবু মায়ের অনেক সমস্যা তৈরি হতে পারে। 

    মনে রাখতে হবে, এই  নবজাতকদের বিশেষ সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে যেমন ভেন্টিলেটর সাপোর্টও প্রয়োজন হতে পারে। শিশুর নিবিড় পরিচর্যার জন্য বিশেষ ইউনিট - এনআইসিইউ-তে থাকতে হতে পারে । ইনকিউবেটরে রেখে এদের চিকিৎসা করা হয়। এছাড়া লক্ষণ অনুসারে সবরকম চিকিৎসা করাতে হয়। তাই NICU তে রেখে ক্রমাগত নজর রাখতেই হয়। শুধু তাই নয়, শিশু যখন একটু পরিণত হয়, তখন আস্তে আস্তে মায়ের দুধ টানতে পারে কি না দেখতে হয়। এছাড়াও আরও অনেক যত্ন নিতে হয়। 

    আরও পড়ুন :

     নির্ধারিত সময়ের আগে ভূমিষ্ঠ সন্তান ? আতঙ্কিত না হয়ে নজর রাখুন এই বিষয়গুলিতে




 



 চিকিৎসক অরুণা তাঁতিয়া