কলকাতা : 'গুপি বাঘা ফিরে এল' মনে পড়ে ? জোয়ান হয়ে যাওয়ার লোভে কি না কি করেছিল গুপি, বাঘা। ২০ বছর বয়স কমিয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে ব্রহ্মানন্দ আচার্য্য কত অন্যায্য কাজ করিয়ে নিয়েছিল ! কিন্তু বাস্তবে কেউ যে কারও বয়স কমাতে পারে না, শেষে বুঝতে পারে গুপি - বাঘা। পুরোটাই মিথ্যে প্রতিশ্রুতি, প্রতারণা। কিন্তু বয়স না কমানো গেলেও, যৌবনটা যদি ধরে রাখা যায় , কেমন হয় ? 


বয়স কি আর থেমে থাকে ? সে তো এগোবেই। ক্যালেন্ডারের পাতা এক ধাপ করে এগিয়ে দেবে তাকে। কিন্তু খাতায় কলমে বয়সকে আপনি অনায়াসে চ্যালেঞ্জ জানাতেই পারেন । সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমের কাছে নিজের ডায়েট প্ল্যান শেয়ার করে চমকে দিয়েছেন ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের একজন  চিকিৎসক। অ্যানেস্থেসিওলজিস্টডাঃ মাইকেল রাইজেনের বয়স ৭৮, মানে আশির দোরগোড়ায়। কিন্তু তাঁর দাবি, লোকজন তাঁকে দেখে বিশ্বাসই করতে চায় না যে তিনি ৬০ পেরিয়েছেন। চিকিৎসকের কথায় শুধু খাওয়া-দাওয়াটা ঠিকঠাক বেছে নিয়েই বয়সটাকে ২০ বছর কমিয়ে ফেলেছেন তিনি।  


টাইমস নাউয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন,  ডায়েট চার্টে বদল এনে  তিনি তাঁর জৈবিক বয়স ৭৮ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৫৭ করে ফেলেছেন । ডাক্তারবাবুর দাবি, তাঁর শরীর তাঁর শারীরিক বয়সের তুলনায় অনেক তরুণ।  শুধু খাওয়া দাওয়া নয়, লাইফ স্টাইলেও কিছু বদল এনেছেন তিনি। সেই টিপস তিনি শেয়ারও করেছেন সংবাদমাধ্যমে।  তাঁর দাবি, এই নিয়ম মেনে ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিককে ২০০৮ সাল থেকে ১০১,০০০ জন স্বাস্থ্য বাবদ বছরে  বিরাট টাকা সাশ্রয় করেছেন।


তিনি জোর দিয়েছেন ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের ডায়েটের উপর। ডায়েটে প্রাধাণ্য দিতে হবে ফলমূল এবং শাকসবজির উপর। লেবু জাতীয় খাবার খেতে হবে নিয়মিত।  কম চর্বিযুক্ত প্রোটিন রাখতে হবে প্ল্যাটারে। নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে  দুগ্ধজাত খাবার, রেড মিট, প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার অভ্যেসকে।  অ্যালকোহল সেবনও করে ফেলতে হবে এক্কেবারে সীমিত। এর ফলে ত্বকে আসবে তারুণ্য। সেই সঙ্গে কমবে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি,শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। রক্তে শর্করার মাত্রা ব্যালেন্সড থাকবে। বিপাকে সমস্যা হবে না। অন্ত্রের কার্যকারিতা ভালভাবে চলবে। নির্দিষ্ট কয়েক ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো সম্ভব হতে পারে। 


ডাঃ মাইকেল Longevity Diet ও অনুসরণ করেন। Valter Longo এই ডায়েট প্ল্যানের প্রবক্তা। চিকিৎসক সাত বছর ধরে এই ডায়েটও ফলো করেন ।  এই ডায়েট অনুসারে মাসে পাঁচ দিন ক্যালোরি সীমাবদ্ধ করতে হয়। প্রথম দিন শুরু করতে হয় ১১০০ ক্যালরি দিয়ে। তারপর তা নামতে নামতে পঞ্চম দিতে ৭০০ য় বেঁধে ফেলতে হয়। 


এছাড়া  ডাঃ মাইকেল প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সব খাবার খেয়ে ফেলার কথা বলে থাকেন। অর্থাৎ যা খাওয়ার দিনে ৮ ঘণ্টার মধ্যে খেতে হবে। তারপর ১৬ ঘণ্টার বিরতি। আবার বাকি আট ঘণ্টা খাওয়া। একে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংও বলা হয়। সেই সঙ্গে তিনি পর্যাপ্ত ঘুমের কথাও বলেছেন। এছাড়া সারাক্ষণ ডেস্কে বসা বা দাঁড়িয়ে কাজ করেন যাঁরা তাঁদের মাঝে মধ্যে হাঁটাহাঁটি করা, প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ওয়াকের পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।  


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।



আরও পড়ুন: Kolkata Market Price: টাস্ক ফোর্স বাজারে ঢুকতেই কমছে দাম, বেরোলেই চড়া আনাজ; অভিযোগ ক্রেতাদের