কলকাতা: বসন্তের আমেজে রোজকার রুটিন ছেড়ে বেরিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে অনেকেরই। কিন্তু ছুটির ফুরসত সবসময় পাওয়া যায় না। তবে সাধ ও সাধ্যের মধ্যে ভ্রমণের জন্য সেরা স্থান হতে পারে শান্তিনিকেতন। বসন্তোৎসব উপলক্ষে অনেকেই ভিড় জমান রবীন্দ্রনির্মিত শিক্ষাক্ষেত্রে। লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয় ওই কয়েক ঘন্টার জন্য। তাই এই সময় ঘুরতে গেলে একটু অন্যরকমভাবে পরিকল্পনা করা জরুরি।
বসন্তোৎসবের দিন কেমন থাকে শান্তিনিকেতন
রবীন্দ্রনাথের ভাবনাপ্রসূত এই উৎসব আসলে ঋতুকে স্বাগত জানিয়ে নিবিড় উদযাপন। আগেকার বসন্তোৎসবের সঙ্গে এখনকার উৎসবের চেহারা আমূল তফাত। বর্তমানে এই দিনটিতে পৌষমেলার চেয়েও বেশি ভিড় হয়। এমনটাই জানাচ্ছেন শান্তিনিকেতন কর্মীমন্ডলীর যুগসম্পাদক কিশোর ভট্টাচার্য। এবিপি লাইভ বাংলাকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এই দিন কয়েক ঘন্টার জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। ফলে ওই দিনটি বোলপুর স্টেশন থেকে শান্তিনিকেতন পর্যন্ত সমস্ত রাস্তায় প্রচন্ড যানজট থাকে। প্রতিকূলতার মধ্যেই বিশ্বভারতী সুষ্ঠুভাবে উৎসব পরিচালনার চেষ্টা করে। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ (World Heritage Site) ঘোষণার পর এই ভিড় বাড়বে বলেই অনুমান।’
বসন্তোৎসবের অনুষ্ঠানসূচী
চলতি বছর বসন্তোৎসব কবে হবে, তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তবে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, উৎসবের আগের দিন বৈতালিক হয়। পর দিন ভোরেও বৈতালিক হয়। বিশ্বভারতী, পাঠভবন, আনন্দ পাঠশালার পড়ুয়ারা মিলে কমবেশি দুই ঘন্টার অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ করেন। এর পর শুরু হয় আবির খেলা। ভিড় সামলাতে আবির খেলার আয়োজন বড় খোলা জায়গায় করার চেষ্টা করা হয়। সাহায্য চাওয়া হয় প্রশাসনের থেকে।’ চলতি বছরেও দোলের দিন ভিড় হতে পারে বলেই মনে করছেন ভূগোলের অধ্যাপক কিশোর ভট্টাচার্য।
বসন্তোৎসবে হোটেলের হাল হকিকত
এই সময় সব হোটেল বুকড থাকে। বুকিং শুরু হয়ে যায় এক-দেড় মাস আগে থেকেই। বসন্তোৎসবের মুখ্য আয়োজক কিশোরবাবুর কথায়, ‘শান্তিনিকেতনে সব মিলিয়ে প্রায় ৩৫০ টি নথিভুক্ত হোটেল, হোম স্টে, লজ রয়েছে। সেগুলির কোনওটাই এই সময় ফাঁকা থাকে না। ফলে প্রতি বছরই এই দিনটি চ্যালেঞ্জ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে।’ এক হোটেল মালিকের কথাতেও শোনা গেল একই সুর। পাশাপাশি তিনি জানালেন এই সময় হোটেলের দামও অফ সিজনের তুলনায় দ্বিগুণ হয়।
শান্তিনিকেতনের দর্শনীয় স্থান (Notable Places Of Santiniketan)
- ছাতিমতলা - এখানেই প্রথম এসে পৌঁছেছিলেন রবীন্দ্রনাথের পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। তার স্মৃতিক্ষেত্র হিসেবে শান্তিনিকেতনের অন্যতম দর্শনীয় স্থান এটি।
- কাঁচমন্দির - ব্রহ্মমন্দিরও বলা হয় একে। ব্রহ্ম উপাসনা করার জন্য এই মন্দির স্থাপন করা হয়। সাপ্তাহিক উপাসনার পাশাপাশি অনুষ্ঠান বিশেষেও উপাসনার আয়োজন হয় এই মন্দিরে।
- আশ্রমপ্রাঙ্গণ - রবীন্দ্রনাথের মুক্তশিক্ষার নিদর্শন আশ্রমপ্রাঙ্গণ। মূল আশ্রম এলাকায় পাঠভবনের ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নেওয়া হয় গাছতলায়।
- রবীন্দ্র ভবন মিউজিয়াম - রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন ব্যক্তিগত সংগ্রহ নিয়ে সাজানো এই মিউজিয়াম। দেশবিদেশ থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন সম্মান এখানে রয়েছে। একইসঙ্গে রয়েছে একটি গ্রন্থাগার। রবীন্দ্রচর্চার জন্য সেখানে আগ্রহী ব্যক্তিরা কার্ড করাতে পারেন। সাধারণ দর্শনীয় স্থানের মধ্যে এটি পড়বে না।
- বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Visva-Bharati University) বিভিন্ন ক্যাম্পাস - বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্যাম্পাস বাইরে থেকে দেখা যেতে পারে। সাধারণত রক্ষীরা ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেন না। তবে অনুমতি থাকলে বেশ কিছু হেঁটে হেঁটে ঘোরা যেতে পারে। একা ঘুরলে কিছুটা সুবিধা হতে পারে।
- কলাভবন - কলাভবন বাংলা তথা ভারতীয় সংস্কৃতি ও শিল্পের অন্যতম পীঠস্থান। কলাভবনের ছাত্রদের কাজ সারা বোলপুর জুড়েই চোখে পড়বে। কলাভবনের ভিতরেও তেমনই কিছু নজরকাড়া স্থাপত্য ও ভাস্কর্য।
- খোয়াই/সোনাঝুরি হাট - সকাল থেকে এই হাট বসে। কিন্তু বিকেলের দিকেই লোক সমাগম বাড়ে। এখান থেকে আদিবাসীদের হাতের তৈরি নানা জিনিস কিনতে পারেন। পোশাক থেকে নানা ধরনের সাজগোজের, ঘরসজ্জার সামগ্রী পাওয়া যাবে। পাশাপাশি গান শোনানোর ব্যবস্থাও রেখেছেন স্থানীয় বাউলরা।
- গীতাঞ্জলি রেল মিউজিয়াম - মৃত্যুর কিছু দিন আগে শান্তিনিকেতন ছেড়ে কলকাতায় এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। যে বিশেষ ট্রেনে করে তিনি ফেরেন, সেই ট্রেনটি রাখা রয়েছে এই মিউজিয়ামে।
- কোপাই নদী - শান্তিনিকেতনের উত্তর দিকে রয়েছে কোপাই নদী। নদী উপত্যকা ও আশেপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নজরকাড়া। পাশাপাশি এটি পিকনিক স্পট হিসেবেও বেশ বিখ্যাত।
- সৃজনী শিল্পগ্রাম - দেশের বিভিন্ন রাজ্যের সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সৃজনী শিল্পগ্রামে। পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে রয়েছে এই শিল্পকেন্দ্রটি। স্বল্পমাত্র মূল্যে টিকিট কেটে প্রবেশ করতে হয় এখানে।
- বল্লভপুর ডিয়ার পার্ক - নামেই রয়েছে ডিয়ার পার্ক। হরিণের জন্যই মূলত বিখ্যাত এই অ্যানিমাল পার্কটি। এখানে প্রবেশমূল্য কিছুটা বেশি।
- কঙ্কালিতলা - মূল শান্তিনিকেতন থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কঙ্কালিতলা। ৫১ সতীপীঠের শেষ পীঠ। এখানে সতীমায়ের ৫১টি খন্ডের মধ্যে কটি বা কোমর অংশটি এখানে এসে পড়ে। যাকে প্রচলিত ভাষায় কাঁখালও বলা হয়। এখানে মায়ের মূর্তি নেই কোনও। পটে পুজো হয়। পাশেই একটি মেলা বসে রোজ।
- সুরুল জমিদারবাড়ি - সুরুলের জমিদার সেই জমিদারদের একজন, যিনি শান্তিনিকেতনের জন্য জমি দান করেছিলেন। সুরুল জমিদারবাড়ির দুর্গাপুজো আজও সমান বিখ্যাত।
খোয়াই সোনাঝুরি হাট
শান্তিনিকেতন কীভাবে যাবেন (Santiniketan Travel) ?
ট্রেন, বাস, গাড়ি তিনটে পরিবহনেই যেতে পারেন। প্রথমে জেনে নেওয়া যাক কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতন যেতে হলে কী কী ট্রেন রয়েছে।
কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতনের ট্রেন
- নিউ জলপাইগুড়ি বন্দেভারত এক্সপ্রেস
- গণদেবতা এক্সপ্রেস
- কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস
- মা তারা এক্সপ্রেস
- কুলিক এক্সপ্রেস
- শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস
- জামালপুর কবিগুরু এক্সপ্রেস
- হাওড়া জয়নগর এক্সপ্রেস
- শহিদ এক্সপ্রেস
- শিয়ালদা গোড্ডা মেমু স্পেশাল
- তেভাগা এক্সপ্রেস
- নিউ জলপাইগুড়ি শতাব্দী এক্সপ্রেস
- মালদা টাউন ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস
- সরাইঘাট এক্সপ্রেস
- বিশ্বভারতী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার স্পেশাল
- উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস
- কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস
- কলকাতা যোগবানী এক্সপ্রেস
- হাওড়া জামালপুর এক্সপ্রেস
- দার্জিলিং মেল
- গৌর এক্সপ্রেস
- আজিমগঞ্জ কবিগুরু এক্সপ্রেস
- পদাতিক এক্সপ্রেস
কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতন বাস
বেশ কিছু বেসরকারি বাস পরিষেবা পাবেন। তবে সরকারি বাসের মধ্যে ধর্মতলা থেকে বেশ কিছু বাস রয়েছে যেগুলি আসানসোল ও দুর্গাপুর যায়। সেখান থেকে বোলপুর যাওয়ার বেশ কিছু বাস পাওয়া যায়। সেগুলির একটি ধরলেই পৌঁছে যাবেন বোলপুর।
কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতন গাড়ি
চারচাকায় বোলপুর শান্তিনিকেতন (Santiniketan Travel Guide) যেতে হলে ডানকুনি, সিঙ্গুর, গুড়াপ দিয়ে বর্ধমান, গুসকরা হয়ে যেতে পারেন। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বোলপুর কমবেশি ১৬০ কিলোমিটার। বিমান থেকে নেমে যেতে লাগবে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা।
শান্তিনিকেতনে কোথায় থাকবেন ?
শান্তিনিকেতনে (Santiniketan Tour Guide) থাকার জন্য লজ, হোটেল ও হোমস্টের ব্যবস্থা রয়েছে। বসন্তোৎসবের জন্য অনেক আগে থেকেই বুকিং শুরু হয়ে যায়। তাই বেশি সময় নষ্ট করা যাবে না। এই সময় গেলে হোটেল, লজের ভাড়া সাধারণ সময়ের দ্বিগুণ হয়ে যায়। সাধারণ সময় বাজেটের মধ্যে রুম চাইলে ননএসির জন্য ১০০০ টাকা ও এসি রুমের জন্য ১৫০০ টাকা খরচ হয়। বসন্তোৎসবের (Basanta utsav) সময় রুমের ভাড়া প্রতি রাতের জন্য নন এসি ১৫০০-২০০০ টাকা ও এসি ২৫০০ টাকা হতে পারে।
কদিনের জন্য প্ল্যান করবেন ?
সাধারণ সময় অর্থাৎ অফ সিজনে উপরের সবকটি দর্শনীয় স্থান ভাল করে দেখতে গেলে অন্তত দুই রাত তিন দিন থাকতেই হবে (Santiniketan Tour Tips)। যাওয়ার দিন ও ফেরার দিন ধরেই এই পরিকল্পনা করতে পারেন। তবে বসন্তোৎসবের দিন ওইখানে কাটাতে হলে, এই সবকটি জায়গা ঘুরতে আরেকটি দিন বেশি লাগতে পারে। কারণ উৎসবের দিন ভিড়ের জন্য ভাল করে ঘুরতে অসুবিধা হলেও হতে পারে।
শান্তিনিকেতনে কোথায় খাবেন ?
হোটেল, হোম স্টে ও কিছু লজে খাওয়াদাওয়ার বন্দোবস্ত থাকে। কিছুক্ষেত্রে রুমের খরচের মধ্যে সেগুলি ধরে নেওয়া থাকে। কিছুক্ষেত্রে আলাদা করে পেমেন্ট করতে হয়।
তবে বাইরে খাবার খেতে হলে বোলপুর, শ্যামবাটি, প্রান্তিক, কোপাইমুখী রাস্তার দিকে বেশ কিছু খাবারের হোটেল রয়েছে। শান্তিনিকেতন পোস্ট অফিসের পিছনে, গুরুপল্লীর ভিতর, অরশ্রী মার্কেটের কাছে, ৪৫ মোড়ের কাছাকাছি ছাত্রদের জন্য অপেক্ষাকৃত সাশ্রয়ী কিছু হোটেল রয়েছে। খাবার স্বাস্থ্যকর (Santiniketan Travel Tips)। বাজেটে ঘুরতে চাইলে সেই হোটেলগুলিতে যেতে পারেন।
বিকেলের খাবার হিসেবে শান্তিনিকেতনে প্রায় সবই পাওয়া যায় এখন। তবে বিশেষভাবে নজর কাড়বে মোমোর রমরমা। সন্ধ্য়ে নামলেই মোমোর দোকানে শান্তিনিকেতন ছয়লাপ হয়ে থাকে। মূলত ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবেই মোমোর এই বাজার তৈরি হয়েছে। অত্যন্ত অল্প দামে সুস্বাদু মোমো তৈরি হয় প্রায় প্রতি দোকানেই। সন্ধ্যের খাবারের জন্য এই দোকানগুলিতে ঢুঁ মেরে দেখতে পারেন।
শান্তিনিকেতনে কীভাবে ঘুরবেন ?
পরিবার নিয়ে গেলে এখানে টোটো বুকিং করতে হয়। টোটোই গোটা বোলপুর শান্তিনিকেতনের মূল পরিবহন। স্টেশনের কাছ থেকেই অনেকে বুকিং নিয়ে থাকেন। একবারেই একটি টোটো বুক করলে আপনি যতদিন থাকবেন, ততদিনই আপনাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে। তবে তার জন্য হাজারের কমে কোনওভাবেই হয় না। বরং ২০০০-৩০০০ টাকাও ঘোরার জন্য লাগতে পারে। তবে একেকদিন একেকটি টোটো বুক করলে খরচ কম পড়তে পারে। সেক্ষেত্রেও পুরোটা নির্ভর করবে কীভাবে কতক্ষণ কোথায় কোথায় ঘুরতে যাচ্ছেন।
শান্তিনিকেতন ভ্রমণের বাজেট (Santiniketan Budget Trip)
- বাজেটে ঘুরতে হলে ট্রেনে করে যেতে হবে। হাওড়া থেকে অসংরক্ষিত টিকিট কেটেও আড়াই ঘন্টার যাত্রা আরামে করতে পারেন। এতে খরচ খুব বেশি হলে ৫০ টাকা। সংরক্ষিত আসনে ট্রেনের ধরন অনুযায়ী খরচ মোটামুটি ১০০-৩০০ টাকা। বন্দেভারতের খরচ দ্বিগুণ।
- হোটেল খরচ বসন্তোৎসবের সময় দ্বিগুণ পড়বে। সেই হিসেব মনে রাখতে হবে। প্রতিরাতের খরচ দ্বিগুণ হবে। কদিনের জন্য যাচ্ছেন সেই অনুযায়ী খরচ বাড়বে, কমবে। এসি হলে এক, ননএসি হলে আরেকরকম।
- খাওয়াদাওয়ার জন্য প্রতিদিন মাথাপিছু গড়ে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা লাগবে।
- টোটো করে ঘোরার জন্য প্রতিদিন গড়ে ৫০০ টাকা ধরে রাখা যেতে পারে। এটি পরিবারের জন্য আনুমানিক অঙ্ক।
অর্থাৎ বসন্তোৎসবের সময় দুই রাত তিন দিন ঘুরলে মাথাপিছু মোট ৩০০০ থেকে ৫০০০ টাকা খরচ হতে পারে। অন্যসময় হলে এই খরচ কমে ২০০০ থেকে ৪০০০-এর মধ্যে পড়বে।
আরও পড়ুন - Purulia Tour Guide: তিনদিনের ছুটিতেই ঘুরে আসুন পুরুলিয়া! কোথায় থাকবেন, কীভাবে যাবেন ? রইল সম্পূর্ণ গাইড