কলকাতা: আলু ছাড়া ভারতীয় রান্না চলে না। সবজি-তরকারি সহযোগেই নয় শুধু, আলুর স্ন্যাকসও আজকাল সমান জনপ্রিয়। যে কারণে একটি বা দু’টি নয়, একসঙ্গে কয়েক কেজি আলু কিনে বাড়িতে মজুত করি আমরা। কিন্তু বেশিদিন আলু মজুত করে রাখলে, তা পচে যায় যেমন, তা থেকে বেরোয় কল বা অঙ্কুর। এমন কল বেরনো আলু কি খাওয়া উচিত? এ নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। (Sprouted Potatoes)
গ্লাইকোঅ্যালক্যালয়েড যৌগ, সোলানিন এবং চাকোনিনের প্রাকৃতিক উৎস আলু। আলু এবং বেগুন-সহ আরও বেশ কিছু সবজিতেও ওই উপাদান রয়েছে। এই গ্লাইকোঅ্যালক্যালয়েড স্বল্প মাত্রায় শরীরে গেলে, তা উপকারী। কারণ অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান শরীরে যায়, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, কোলেস্টেরলের প্রভাব কম পড়ে শরীরে। কিন্তু গ্লাইকোঅ্যালক্যালয়েড বেশিমাত্রায় শরীরে গেলে, তা বিষের সমান। (Health Tips)
Healthline জানিয়েছে, আলুকে কল বেরিয়ে গেলে গ্লাইকোঅ্যালক্যালয়েডের মাত্রাও বেড়ে যায়। ফলে কল বেরনো আলু খেলে বিপদ হতে পারে। কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিনের মধ্যেই এর প্রভাব বুঝতে পারবেন। গ্লাইকোঅ্যালক্যালয়েডের অল্প ডোজ শরীরে গেলে বমি, ডায়রিয়া, তলপেটে যন্ত্রণা হতে পারে। বেশি ডোজ শরীরে গেলে আবার রক্তচাপ নেমে যেতে পারে, হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, জ্বর, মাথাব্যথা হয়, বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি আমরা। অতিরিক্ত গ্লাইকোঅ্যালক্যালয়েড থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। শুধু তাই নয়, কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গর্ভাবস্থায় কল বেরনো আলু খেলে শিশুর শরীরেও সমস্যা দেখা দেয়।
আলুচারার পাতা থেকে ফুল, চোখ, অঙ্কুর, সবেতেই গ্লাইকোঅ্যালক্যালয়েড থাকে। আলুর পচলে, সবুজ হয়ে গেলে, স্বাদ তিক্ত হলে বুঝতে হবে তাতে গ্লাইকোঅ্যালক্যালয়েডের মাত্রা অত্যধিক হয়ে গিয়েছে। বিষ যাতে শরীরে না যায়, তার জন্য ওই বিশেষ বিশেষ অংশ কেটে বাদ দিতে পারেন। আলু ছাড়িয়ে নিলে, ভেজে নিলেও কিছুটা কমে গ্লাইকোঅ্যালক্যালয়েডের মাত্রা তবে সেদ্ধ করলে, বেক করলে বা মাইক্রোওয়েভে দিলে তেমন কিছু পরিবর্তন হয় না। তবে নিরাপদ থাকতে কল বেরনো আলু না খাওয়ারই পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। National Capital Poison Center জানিয়েছে, কল বেরনো, সবুজ হয়ে যাওয়া আলু ফেলে দেওয়াই শ্রেয়।
আলু দীর্ঘ সময় মজুত করে রাখলে কল তো বেরোবেই। কিন্তু কা আটকানোর উপায়ও রয়েছে। আলু কিনে এনে উপুর করে দেওয়ার পরিবর্তে চারিয়ে রাখুন। চেষ্টা করুন, যতটা প্রয়োজন, ততটাই কেনার। ঠান্ডা ও শুষ্ক জায়গায় আলু মজুত করুন। অন্ধকার জায়গায় রাখুন আলু। কল বেরোতে দেখলে বা উপরিউক্ত লক্ষণ দেখলে সেই আলু না খাওয়াই ভাল।