কলকাতা: ওজন কমাতে হলে খাবার থেকে ক্যালোরি ছেঁটে বাদ দিতে হবে। আবার সুগার থাকলেও ক্যালোরি কমাতে হয়। তেমনটাই নিয়ম বেঁধে দেন চিকিৎসক । সেক্ষেত্রে মিষ্টির স্বাদ পেতে অনেকেই খাবারে সুগার ফ্রি ব্যবহার করেন। সুগার ফ্রি খাবারে চিনির মতোই মিষ্টি স্বাদ এনে দেয়। তবে খাবারের এই উপকরণ লুকিয়ে বিপদ ডেকে আনছে না তো? সুগার ফ্রি নিয়ে এই বিতর্ক দীর্ঘদিনের। জেনে নেওয়া যাক এটি কতটা খেলে নিরাপদ। আর কতটা খেলে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।


কোন ধরনের সুগার ফ্রি বাজারে রয়েছে?


বাজারে বেশ কয়েকরকমের সুগার ফ্রি পাওয়া যায়। এই তালিকায় রয়েছে —



  • অ্যাসপারটেম (সাধারণ চিনির থেকে ২০০ গুণ বেশি মিষ্টি)

  • সাইক্লামেট (সাধারণ চিনির থেকে ৫০ গুণ বেশি মিষ্টি)

  • নিওটেম (সাধারণ চিনির থেকে ১৩,০০০ গুণ বেশি মিষ্টি)

  • নিওহেসপিরিডিন (সাধারণ চিনির থেকে ৩৪০ গুণ বেশি মিষ্টি)

  • স্যাকারিন (সাধারণ চিনির থেকে ৭০০ গুণ বেশি মিষ্টি)

  • সুক্রালোজ (সাধারণ চিনির থেকে ৬০০ গুণ বেশি মিষ্টি)

  • অ্যাডভানটেম (সাধারণ চিনির থেকে ২০,০০০ গুণ বেশি মিষ্টি)

  • অ্যাসসালফেম পটাশিয়াম (সাধারণ চিনির থেকে ৩৫০ গুণ বেশি মিষ্টি)


সুগার ফ্রি-এর কী কী উপকার (Sugar free benefits) ?



  • ক্যালোরি একেবারেই থাকে না সুগার ফ্রিতে। কিছু সুগার ফ্রিতে ক্যালোরি থাকলেও তার পরিমাণ একেবারেই কম। ফলে ওজন কমাতে সাহায্য করে এটি। 

  • ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সুগার ফ্রি বিশেষ উপকারী। এতে চিনি না খেলেও চিনির স্বাদ পাওয়া যায়। রক্তে সুগারের মাত্রা ঠিক থাকে। 


সুগার ফ্রি-এর বিপদ (Sugar free risks) !



  • সুগার ফ্রি খাওয়ার ফলে ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ইন্টারন্যশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার অ্যাসপারটেমকে কারসিনোজেনিক বলেছে। রোজ দেহের প্রতি কেজি ওজনে ৪০ মিলিগ্রামের বেশি এই উপকরণটি প্রবেশ করলে ক্যানসার হতে পারে।

  • এছাড়াও অন্য গবেষণায় পাওয়া গিয়েছে হার্টের রোগের প্রমাণ। দীর্ঘদিন ধরে কৃত্রিম চিনি খেলে এই হার্টের নানা রোগ যেমন হার্ট অ্যাটাক, আর্টারি ব্লকেজের আশঙ্কা বাড়তে পারে।

  • সুগার ফ্রি খিদের উপরেও প্রভাব ফেলতে পারে। শরীরে ক্যালোরির পরিমাণ না বাড়ালেও এটি মিষ্টি। মিষ্টির স্বাদ মস্তিষ্ককে খিদের জানান দেয়। ফলে খিদে বাড়তে শুরু করে।

  • এই কারণেও একাধিক গবেষকদের কথায় সুগার ফ্রি শরীরের ওজন বাড়িয়ে দেয়। কারণ এটি সুগার ক্রেভিং আরাও বাড়িয়ে দেয়। সেই ফাঁদে পা দিয়ে খাবার খেতে থাকলে আদতে ওজন‌ না কমে বাড়তে থাকে।

  • মনে রাখা ভাল, সুগার ফ্রি আলাদা করে না খেলেও কোল্ডড্রিঙ্কস, কেকে এটি মেশানো হয়। যা আমরা অজান্তেই খেয়ে থাকি।


কতটা খাবেন সুগার ফ্রি ?


২০২৩ সালের অগস্ট মাসে ইন্টারন্যশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার (আইএআরসি) গবেষণার ভিত্তিতে আইসিএমআর একটি বিবৃতি দেয়। তাতে বলা হয়, সুগার ফ্রি রোজ দেহের কেজি প্রতি ওজনে ৪০ মিলিগ্রামের বেশি খাওয়া উচিত নয়। কারণ আইএআরসি-র হিসেবমাফিক এটি কারসিনোজেনিক!


ডিসক্লেইমার: লেখায় উল্লেখিত দাবি বা পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। এটি মেনে চলার আগে অবশ্যই সরাসরি বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


আরও পড়ুন - Dinner Time : রাতের খাবার কটায় খেলে আর কথাই নেই ! সন্ধে রাত না আর একটু বেশি