কলকাতা: ওজন কমানোর জন্য় অনেকেই ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করেন। কেউ কেউ আবার হাঁটাহাঁটি, দৌড়ানোর দিকেও ঝোঁকেন। এছাড়া জিম তো রয়েছেই। কিন্তু অতিরিক্ত শরীরচর্চাও বিপদ ডেকে আনে। হার্টের বিপদ হতে পারে অজান্তেই। সম্প্রতি বেশ কিছু এমন ঘটনা দেখা গিয়েছে। জিম করতে গিয়ে চরম বিপদ ঘটে গিয়েছে। তাহলে উপায় ? আসলে হার্ট শরীরচর্চা কতটা নিতে পারছে, সেটাই দেখতে হবে। 


শরীরচর্চার সময় শরীরের ভিতর কী ঘটে ?


শরীরচর্চার সময় আমাদের পেশি সঞ্চালন বেড়ে যায়। এর জন্য অতিরিক্ত অক্সিজেন লাগে। আর রক্ত সেই অক্সিজেন বয়ে আনে। এবার পেশি সঞ্চালন বাড়ে বলে হার্টের পেশিও দ্রুত কাজ করে। দ্রুত রক্ত পাম্প করে সারা দেহে পৌঁছে দেয়। এতে মেটাবলিজম উন্নত হয়। ক্যালোরি ঝরতে শুরু করে। সহজ ভাষায় এই হল শরীরের ভিতরের ঘটনাগুলি। 


হার্ট কেন হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় ?


গণ্ডগোল হয় হার্টের পাম্পের সময়। হার্টের রক্ত পাম্প করার একটি নির্দিষ্ট ক্ষমতা রয়েছে। সেটি আর পাঁচটা মেশিনের মতোই অনবরত না থেমে কাজ করে চলেছে। তবে মেশিন তো। তার ক্ষমতার বেশি সে পাম্প করতে পারে না। ব্যায়াম খুব জোরদার হলে হার্ট পাম্পের হার বাড়ে। এই হার হার্টের নির্দিষ্ট ক্ষমতাকে ছাপিয়ে গেলেই বিপদ। তখন হার্টের পেশি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ফলে দ্রুত শরীরে অক্সিজেন লেভেল কমতে থাকে। 


কীসে কমবে বিপদ ?


হার্ট রেট নিয়ন্ত্রণ রাখলেই বিপদ এড়ানো যায়। হার্টের রেট নির্দিষ্ট ক্ষমতার বেশি বাড়তে দেওয়া যাবে না। এর বেশি বাড়লেই বিপদ আসন্ন। 


কোন বয়সে কত হার্ট রেট থাকা উচিত ?


এই বিষয়ে একটি হিসেব কষে দিয়েছে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন। আমরা দুই ধরনের শরীরচর্চা করে থাকি। একটি মাঝারি পরিশ্রমের। হাঁটাহাঁটি, ব্রিস্ক ওয়াক, জগিং এই ধরনের ব্যায়াম। অন্যটি ভীষণ পরিশ্রমের। জিমে যাওয়া, ভারোত্তলন ইত্যাদি।



  • মাঝারি পরিশ্রমের ব্যায়ামে হার্ট রেট সাধারণ হারের থেকে ৭০ শতাংশ বেশি বাড়তে পারে।

  • ভীষণ পরিশ্রমের ব্যায়ামে হার্ট রেট সাধারণ হারের থেকে ৮৫ শতাংশ বেশি বাড়তে পারে।

  • ৮৫ শতাংশের বেশি হলেই হার্টের বিপদ।


ধরা যাক, একজনের বয়স ৫০ বছর। তার সর্বোচ্চ হার্ট রেট ২২০-৫০ অর্থাৎ ১৭০ হবে। (যা বয়স তা ২২০ থেকে বিয়োগ করতে হবে।)



  • এবার মাঝারি পরিশ্রমের ব্যায়ামে ৫০ বছর বয়সীর হার্ট রেট হবে ১৭০×০.৫  = ৮৫

  • ভারী পরিশ্রমের ব্যায়ামে ওই ব্যক্তির হার্ট রেট হবে ১৭০×০.৮৫  = ১৪৪.৫

  • অর্থাৎ ব্যায়ামের সময় ওই ব্যক্তির হার্ট রেট কোনওভাবেই ১৪৫ পেরিয়ে যাওয়া ঠিক নয়। তাহলে হার্টের বিপদ দেখা দেবে না।


ডিসক্লেইমার: লেখায় উল্লেখিত দাবি বা পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। এটি মেনে চলার আগে অবশ্যই সরাসরি বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


আরও পড়ুন - Mental Health: হাঁটাহাঁটি ছেড়ে নাচ করবেন ? তাতেই কি মন ভাল থাকে বেশি ?