কলকাতা: বাঙালির বিরিয়ানি প্রেমের কথা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। ঘরোয়া উৎসব হোক বা বড় পার্বণ, মেনুতে বিরিয়ানি থাকলে জমে যায় সেই দিনটা। ভাত আর মাংস একসঙ্গে থাকে বলে অনেকেই এটি খেতে বেশি ভালবাসেন। বাঙালি রসনাকে প্রাধান্য দিয়ে বাংলার আনাচেকানাচে এখন বিরিয়ানির দোকান।
ইতিহাসবিদদের অনেকে দাবি করেন, বিরিয়ানি আদতে দক্ষিণ ভারতের পোলাও থেকে কিছুটা প্রভাবিত। তবে আরেকদল বিশেষজ্ঞদের কথায়, বিরিয়ানি পার্সিদের আমদানি। আবার কেউ কেউ মনে করেন, এটি মুঘলদের আবিষ্কার। তবে বিরিয়ানি কি আর শুধু একরকম ! সারা দেশ জুড়ে নানা নামের নানা স্বাদের বিরিয়ানি রয়েছে। বিরিয়ানির কমবেশি ২৫ রকমের ভ্যারাইটি রয়েছে। যা জিভে জল আনার মতোই। এখানে কিছু বিখ্যাত বিরিয়ানির কথা উল্লেখ করা হল।
হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানি - বিরিয়ানির পীঠস্থান বলতে যে যে স্থানগুলিকে বোঝনো হয়, তার মধ্যে হায়দ্রাবাদ অন্যতম। একে রান্নার কায়দার জন্য দম বিরিয়ানিও বলা হয়। মূলত পাঁঠার মাংস এর অন্যতম উপকরণ।
বোম্বে বিরিয়ানি - বোম্বে বিরিয়ানির বিশেষত্ব ভাতের মাঝে মাংসের স্তর। এছাড়াও, থাকে বিভিন্ন সুগন্ধি মশলা দিয়ে তৈরি গ্রেভি। এছাড়াও, এর বিশেষত্ব রং ও হালকা টক স্বাদে। মুঘলদের প্রভাবেই বোম্বেতে বিরিয়ানির প্রচলন শুরু হয় বলে মনে করা হয়।
কলকাতা বিরিয়ানি - ডিম ও আলুর জন্য কলকাতার বিরিয়ানির খ্যাতি। ইতিহাসবিদদের মতে, আওয়াধের শেষ নবাব ওয়াজেদ আলি শাহের হাত ধরেই কলকাতায় বিরিয়ানির প্রচলন। স্বাদের নিরিখেও হায়দ্রাবাদের বিরিয়ানির থেকে আলাদা তিলোত্তমার প্রিয় পদ।
কাশ্মিরী বিরিয়ানি - বিরিয়ানির চাল ও মাংস ঘি-তে রান্না হবে। দই, জাফরান ও বিভিন্ন সুগন্ধি মশলা বিরিয়ানির স্বাদ আনতে ব্যবহার করা হয়। ইতিহাসবিদদের একাংশের মতে, নবাবদের সভায় থাকা কাশ্মিরী পন্ডিতদের হাত ধরে এই বিরিয়ানি কাশ্মিরী বিখ্যাত হয়।
লখনউ বিরিয়ানি - লখনউ বিরিয়ানিকে অনেকে লখনউ নবাবি বিরিয়ানিও বলে থাকেন। তার নেপথ্যের বড় কারণ একটা সময় নবাবরাই এর পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন। মাটনস্টক দিয়ে এই বিরিয়ানি রান্নার সময় অন্তত দুই থেকে তিন ঘন্টা। ধীরে ধীরে রান্নার হবে। মাংস হবে নরম তুলতুলে।
থালাসারি বিরিয়ানি - দক্ষিণ ভারতের অন্যতম বিখ্যাত এই বিরিয়ানি। অনেকেই একে কেরলের বিরিয়ানি বলে চেনেন। থালাসারি বিরিয়ানির মূল বিশেষত্ব এর চাল। জিরাকাসাল চাল ব্যবহার করা হয় এই বিরিয়ানি রাঁধতে। অনেকেই আবার একে মালাবার বিরিয়ানি বলেও উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন - Anti Valentines Week: চড়, লাথি, ব্রেক-আপ! কেন পালন করা হয় অ্যান্টি ভ্যালেনটাইনস উইক ?