আমাদের লিভার শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। যা রক্ত পরিশোধন, বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ, হজমে সাহায্য এবং প্রয়োজনীয় প্রোটিন উৎপাদনে কাজ করে। যখন এটি সঠিকভাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তখন শরীরে অনেক পরিবর্তন দেখা দিতে শুরু করে এবং এর মধ্যে প্রথমটি প্রস্রাবে দৃশ্যমান হয়। এই লক্ষণগুলি প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু ভুল হওয়ার ইঙ্গিত দিতে পারে। আসুন পাঁচটি লক্ষণ দেখে নেওয়া যাক যা প্রস্রাবের মাধ্যমে লিভারের ক্ষতি নির্দেশ করে।
প্রস্রাব হলুদ বা বাদামী হয়ে যাওয়া-
যদি কারো প্রস্রাব স্বাভাবিকের চেয়ে গাঢ় হলুদ বা বাদামী হয়ে যায়, তাহলে এটি লিভারের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। এই ধরণের প্রস্রাব লিভারের কর্মহীনতার কারণে হয়। যদি কারো সঙ্গে এটি ঘটে, তাহলে অবিলম্বে সতর্ক হতে হবে।
প্রস্রাব ফেনাযুক্ত হওয়া-
যদি প্রস্রাব ফেনাযুক্ত দেখায় এবং ক্রমাগত চলতে থাকে, তাহলে এটি প্রোটিন লিকেজ হওয়ার লক্ষণ হতে পারে, যা লিভার ফেইলিওর বা লিভার সিরোসিসের সঙ্গে সম্পর্কিত।
দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব
অস্বাভাবিকভাবে তীব্র এবং দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব লিভারের সমস্যার আরেকটি লক্ষণ। যখন লিভার সঠিকভাবে টক্সিন প্রক্রিয়া করতে পারে না, তখন এগুলি কিডনি এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে নির্গত হয়, যার ফলে প্রস্রাবের দুর্গন্ধ হয়।
প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া-
যকৃতের রোগ শরীরে অ্যামোনিয়ার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, যা প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়ার কারণ হতে পারে। যদি আপনি প্রস্রাব করার সময় ঘন ঘন জ্বালাপোড়া অনুভব করেন, তাহলে এটিকে হালকাভাবে নেবেন না।
ঘন ঘন প্রস্রাব-
যকৃতের ক্ষতির ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে। তবে যদি পরিমাণ কম হয়, তাহলে এটি গুরুতর লিভার রোগের ইঙ্গিত দিতে পারে।
লিভারের রোগ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় এবং দ্রুত চিকিৎসা না করালে তা মারাত্মক হতে পারে। প্রস্রাবের এই ছোট ছোট পরিবর্তনগুলি আমাদের শরীরের জন্য সতর্কীকরণ লক্ষণ। যদি আপনি এই লক্ষণগুলির কোনওটি লক্ষ্য করেন, তাহলে ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করতে দেরি করবেন না। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের তথ্য অনুসারে, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ লিভারের রোগে মারা যায়। অথবা প্রতি ২৫ জনের মধ্যে ১ জনের মৃত্যু লিভারের ফেলিওরের কারণে হয়। তরুণদের মধ্যে এই সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে।
ডিসক্লেইমার: লেখায় উল্লেখিত দাবি বা পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। এটি মেনে চলার আগে অবশ্যই সরাসরি বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।