নয়াদিল্লি: টিভি দেখতে দেখতে হঠাৎ মাথার যন্ত্রণা। প্যারাসিটামল নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তরুণী। কিন্তু মাঝরাতেই ঘটল মারাত্মক ঘটনা। নড়তে চড়তে না দেখে, কাঠ হয়ে শুয়ে থাকতে দেখে সন্দেহ জাগে সঙ্গীর। ঠেলাঠেলি করেও সাড়া না মেলায় তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্য়বস্থা করেন। আর তাতেই উঠে এল মারাত্মক তথ্য। (Stroke in Young People)
ইংল্যান্ডের ডার্বিশায়ার থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে। ২০ বছর বয়সি এস্থার লিটলউড পুলিশ অফিসার হওয়ার প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন তিনি। সেই অনুযায়ী খাতায়কলমে ‘ফিট’ এবং ‘হেলদি’ ছিলেন এস্থার। সম্প্রতি বাড়িতে বসে টিভি দেখছিলেন তিনি। সেই সময় মাথার যন্ত্রণা শুরু হয় তাঁর। আগুপিছু না ভেবে একটি প্যারাসিটামল খেয়ে ঘুমাতে যান এস্থার। (Stroke Symptoms)
এর কয়েক ঘণ্টার পর, এস্থারের সঙ্গী দেখেন তিনি বিছানায় কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে রয়েছেন। ডাকাডাকি করে, ঝাঁকুনি দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি এস্থারের। সঙ্গে সঙ্গে এস্থারকে হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর সঙ্গী। শেষে, চেস্টারফিল্ড রয়্যাল হাসপাতালে কোমায় চলে যান এস্থার। পরে রিপোর্ট এলে দেখা যায়, এস্থারের হৃদযন্ত্রে ছিদ্র ছিল। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যার নাম Patent Formen Ovale.
হৃদযন্ত্রের ওই ছিদ্র আগে ধরা যায়নি, যা থেকেই স্ট্রোক হয় এস্থারের। স্ক্যান করে দেখা যায়, এস্থারের হৃদযন্ত্রের উচ্চ প্রকোষ্ঠে ছোট্ট একটি ছিদ্র রয়েছে, যার মাধ্যমে জমাট বাঁধা রক্ত সোজা মস্তিষ্কে পৌঁছে যায় এস্থারের। সবমিলিয়ে ১২ দিন কোমায় ছিলেন তিনি। হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। এই মুহূর্তে অস্ত্রোপচারের জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি, যাতে তাঁর হৃদযন্ত্রের ওই ছিদ্র বন্ধ করা যায়। নিজের ঘনিষ্ঠ লোকজন এবং পরিচিতদের এই মুহূর্তে সতর্ক করছেন এস্থার। স্ট্রোকের উপসর্গ উপেক্ষা করা উচিত নয় বলে বোঝাচ্ছেন সকলকে।
নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে এস্থার বলেন, “আমি বরাবর শারীরিক ভাবে সক্রিয় ছিলাম। পুলিশের চাকরিতে সব পরীক্ষায় পাশ করেছি। অগাস্ট থেকে কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। প্রতিদিন দৌড়তাম, টেস্ট হতো।” এস্থার জানিয়েছেন, তাঁর মাথার বাঁদিকে প্রথমে যন্ত্রণা শুরু হয়, ক্রমে তা কান পর্যন্ত ছড়ায়। যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে প্যারাসিটামল খান তিনি। এর পর ঘুমাতে চলে যান। ঠিক কী ঘটেছিল, তা পরিষ্কার ভাবে মনেও করতে পারেননি এস্থার। মায়ের সঙ্গে নিজের কথোপকথন তুলে ধরেন।
এস্থার জানিয়েছেন, স্ট্রোক বলতে সাধারণত মুখ বা হাতের কথা উঠে আসে। কিন্তু তাঁর ক্ষেত্রে মাথার যন্ত্রণাই ছিল উপসর্গ। চিকিৎসকরা স্ট্রোকের আরও বেশ কিছু উপসর্গ চিহ্নিত করেছেন, যেমন, শরীরের ১) একদিক যদি হঠাৎ অসাড় হয়ে যায়, ২) সাডেন ভার্টিগো, অর্থাৎ হঠাৎ যদি মাথা ঘুরতে শুরু করে, কানের ভিতরে সমস্যা হয়, বমি পায়, ভারসাম্য হারায় শরীর, ৩) কিছু গিলতে সমস্যা, ৪) হঠাৎ স্মৃতিবিভ্রম, ধন্দে পড়া।