কলকাতা : আজ মহালয়া (Mahalaya)। পিতৃপক্ষের শেষ এবং দেবীপক্ষের সূচনা হয়। আর মহালয়া মানেই দুর্গাপুজো (Durga Puja 2021) আসতে আর বাকি মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা দিন। এই মহালয়াকে ঘিরে কথিত রয়েছে বহু ইতিহাস, বহু গল্প। পূরাণ অনুযায়ী মহালয়ার বহু মাহাত্ম্যের কথা শোনা যায়। পাশাপাশি বাঙালিদের মহা উৎসব দুর্গাপুজোয় দেবীর চক্ষুদান হয় মহালয়া দিয়ে। তাই আজকের দিনটার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে বাঙালিদের কাছে। শরতের পেঁজা তুলোয় ভরা মেঘ ও রোদের আকাশে চারিদিকে কাশফুলের সমারোহ মনে করিয়ে দিচ্ছে দুর্গাপুজো এসে গিয়েছে। পূরাণ অনুযায়ী দুগাপুজোকে অকাল বোধন নামেও উল্লেখ করা হয়। কী এই অকাল বোধন? কেনই বা দুর্গাপুজোকে অকাল বোধন বলা হয়?
আরও পড়ুন - Mahalaya 2021: 'অল ইন্ডিয়া রেডিও-র অফিসের সামনে দীর্ঘদিন ধরনায় বসেছিলেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র'
পূরাণে কথিত রয়েছে যে, প্রিয়তমা পত্নী সীতাকে উদ্ধার করার সময় লঙ্কার রাজা রাবনের সঙ্গে যুদ্ধ হচ্ছিল শ্রী রামচন্দ্রের। যুদ্ধের শুরুতে দেবী দুর্গার কাছ থেকে আশির্বাদ প্রার্থনা করেন রামচন্দ্র। তিনি জানতে পারেন, যদি তিনি দেবী দুর্গাকে একশো আটটি নীল পদ্ম দিয়ে পুজো দেন, তাহলে দেবী দুর্গা সন্তুষ্ট হবেন। কিন্তু পুজোর সময়ে একশো সাতটি নীল পদ্মের আয়োজন করতে পারেন রাম। অনেক চেষ্টা করে আর একটি নীল পদ্ম খুঁজে না পেয়ে তার পরিবর্তে শেষ পর্যন্ত নিজের একটি চোখ দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। রামচন্দ্রের এই মনোভাবনায় সন্তুষ্ট হয়ে দেবী দুর্গা আবির্ভূত হন এবং তাঁকে আশির্বাদও করেন। প্রসঙ্গত, হিন্দু শাস্ত্রমতে বসন্তকালই হল দুর্গাপুজোর সঠিক সময়। লঙ্কার রাজা রাবন বসন্ত কালেই দেবী পার্বতীকে পুজো করে তাঁকে সন্তুষ্ট করে। রাবনের পুজোয় সন্তুষ্ট হয়ে দেবী পার্বতী তাকে সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে, তার সঙ্গে এমনটাও শর্ত রাখেন যে, যদি সে দেবীর পুজোর মন্ত্রে কোনওরকমের ভুল ত্রুটি করে ফেলে, তাহলে তিনি রাবনকে পরিত্যাগ করবেন। আর সেই কারণেই রামচন্দ্রের সমস্ত অস্ত্রই রাবনের উপর বিফলে যাচ্ছিল। এরপরই ব্রহ্মা রামকে দেবী দুর্গার আরাধনা করতে বলেন। এবং বসন্ত কালের পরিবর্তে শরৎ কালের আশ্বিন মাসে শ্রী রামচন্দ্র দেবী দুর্গার আরাধনায় করায় শারদীয়া দুর্গাপুজোকে অকাল বোধন বলা হয়।