কলকাতা: আগে হাতেগোনা কিছু জায়গায় এর কথা শোনা যেত। কিন্তু কোভিড যেন সারা বিশ্বের ঘরে ঘরে এর পরিচিতি এনে দিয়েছে। কথা হচ্ছে ওয়ার্ক ফ্রম হোম নিয়ে। গত কয়েক বছরে বারবার ধাক্কা দিয়েছে কোভিড ঢেউ। প্রথমে তার ধাক্কায় প্রায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল কাজের দুনিয়া। তারপর ধীরে ধীরে এসেছে ওয়ার্ক ফ্রম হোম- পদ্ধতি। যেখানে যেখানে সম্ভব সেখানে শুরু হয়েছে এই পদ্ধতি।


অফিস গিয়ে নয়, বাড়িতে থেকেই একইভাবে অফিসের কাজ করে যাওয়ার অভ্যাস। কোভিডের সময়ে এর অভ্যাসও হয়েছে। ধীরে ধীরে কোভিডের কোপ কমেছে। ইদানিং চিন এবং কিছু দেশে কোভিড সংক্রমণের কথা ফের শোনা গেলেও, এখনও আগের মতো পরিস্থিতি নয়। এই পরিস্থিতিতে অনেক সংস্থা ওয়ার্ক ফ্রম হোম-তুলে নিলেও, রেখে দেওয়া সংস্থার সংখ্যাও কম নয়। শুধুমাত্র কোভিড ঠেকাতেই নয়, আরও নানা সুবিধা রয়েছে এর।


বহু সংখ্যক কর্মী বাড়ি বসে একই কাজ করলে, সংস্থার অফিস চালানোর খরচ অনেকটাই কমে। বেঁচে যায় যাতায়াতের অনেকটা সময়। পাশাপাশি, যাঁদের বাড়িতে শিশু রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে সেদিকটা সামলে কাজ করতে কিছুটা হলেও সুবিধা হয়। রয়েছে আরও সুবিধার দিক। কিন্তু অফিসের যা পরিবেশ, তার সঙ্গে তো বাড়ির পরিবেশে ফারাক থাকবেই। এদিকে কাজও একেবারে ঠিক হতে হবে, কারণ তার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কেরিয়ার। ফলে কিছু কিছু দিকে খেয়াল রাখতেই হবে।


নির্দিষ্ট রুটিন:
বাড়ি বসে কাজ হলেও, ছুটির দিনের সঙ্গে কাজের দিনের রুটিন একেবারে আলাদা রাখতে হবে। কখন ধুম থেকে ওঠা হবে, কখন খাওয়া সারতে হবে, তার রুটিন তৈরি করে সেটাই মেনে চলতে হবে। বাড়ির কোনও দায়িত্ব থাকলে তার জন্যও কিছুটা জায়গা ওই রুটিনে রাখতে হবে। রুটিন থাকলে ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে একটা ফারাক বজায় রাখতে সুবিধা হবে।


কাজের নির্দিষ্ট জায়গা;
যতই বাড়ি বসে কাজ হোক, কখনও বিছানায়, কখনও সোফায় বসে কাজ না করাই ভাল। নির্দিষ্ট ঘরে বা ঘরের নির্দিষ্ট কোণায় কাজের জায়গা রাখতে হবে। সেটা যেন কাজ করার জন্য ভাল হয়। আওয়াজ যেন কম আসে। ঠিকমতো আলো যেন থাকে। বসার জায়গার দিকেও নজর দিতে হবে। অফিসে যেমন ডেক্স থাকে, তেমনই ডেস্ক তৈরি করতে পারেন।       


প্রতিদিনের কাজের হিসেব:
যেহেতু বাড়ি বসে কাজ, তাই অনেককিছুই আলাদা হবে। বাড়ির নানা কাজের দায়িত্ব থাকতে পারে। অন্যদিকে অফিসের কাজের চাপও রয়েছে। এগুলি সামলাতে প্রতিদিনের কাজের একটি শিডিউল তৈরি করা প্রয়োজন। অফিসের মাঝেই কখন একটু বিরতি নেবেন তা আগে থেকে তৈরি করে নিতে হবে যতটা সম্ভব। অন্যসময় কাজ ছেড়ে উঠবেন না। তাহলে মনসংযোগ বজায় রাখতে সুবিধা হবে না।


মনসংযোগে নজর:
বাড়িতে কাজ করলে নানা বিঘ্ন ঘটতেই পারে। পাশের রাস্তায় গাড়ির আওয়াজ। অন্য ঘরে টিভির আওয়াজ। বা অন্য কারও ফোনে কথা বলার আওয়াজ থাকবেই। সন্তান থাকলে বা পোষ্য থাকলেও মনসংযোগে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে আলাদা ঘরে দরজা বন্ধ করে কাজ করতে পারেন। বাকি সদস্যদের বলতে পারেন, কোন কোন সময়ে আপনাকে ডাকা যাবে না। নয়তো এই কাজে সাহায্য করবে ভালমানের কোনও নয়েজ ক্যান্সেলেশন হেডফোন।   


চেয়ারে নজর:
ওয়ার্ক ফ্রম হোমে চেয়ারের দিকে নজর রাখা প্রয়োজন। সম্ভব হলে একটা চেয়ার কিনে নিতে পারেন। অনেকসময় সেই টাকা হাতে থাকে না, বাড়িতেও চেয়ার রাখার জায়গা থাকে না। সেক্ষেত্রে যতটা সম্ভব ঠিকমতো বসার অভ্যাস করুন। যাতে posture ঠিক থাকে। প্রয়োজনে কিছুক্ষণ অন্তর অন্তর উঠে সামান্য কয়েক মিনিট ফ্রি হ্যান্ড করে নিতে পারেন।


ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।


আরও পড়ুন: এই পাঁচ খাবারে তৈরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, দূরে থাকবে ভোগান্তি