কলকাতা: রক্তচাপের ওষুধেই সারবে স্তন ক্যানসার। যে সে ক্যানসার নয়। স্তন ক্যানসারের সবচেয়ে মারাত্মক ভ্যারিয়ান্ট। ট্রিপল নেগেটিভ স্তন ক্যানসারই নাকি সারিয়ে তোলা সম্ভব। আর সেই লক্ষ্যেই এই নিয়ে শুরু হল গবেষণা। গবেষণা চলছে হউস্টন কলেজ অব ফার্মাসি ড্রাগ ডিসকভারি ইনস্টিটিউটে। গবেষক ভারতীয় বংশোদ্ভুত মেঘনা ত্রিবেদী। ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি মেডিক্যাল রিসার্চ অ্যাকিউজিশন অ্যাক্টিভিটি এই গবেষণার জন্য় ১.১ মিলিয়ন ডলার ফান্ড দিয়েছে।
কেন ভয়ানক ট্রিপল নেগেটিভ স্তন ক্যানসার ?
ট্রিপল নেগেটিভ নামের কারণ তিনটি রিসেপ্টরের বিরুদ্ধে এই ক্যানসারে নেতিবাচক ফল আসে। সেই রিসেপ্টর তিনটি হল ইস্ট্রোজেন রিসেপটর, প্রোজেস্টেরন রিসেপ্টর ও অতিরিক্ত এইচইআর২ প্রোটিন।
- এই স্তন ক্যানসার অন্যান্য ক্যানসারের তুলনায় ফিরে আসার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি।
- যখন ধরা পড়ে, ততক্ষণে শরীরের নানা জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে ক্যানসার কোশ। যার ফলে আবার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা হয়ে থাকে।
- এই ক্যানসারের নির্দিষ্ট টার্গেটেড থেরাপি কম। তাই বেশিরভাগ সময় কেমোথেরাপি দিয়ে সারানোর চেষ্টা করা হয়।
রক্তচাপের ওষুধই কেন ?
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য নেবিভোলোল অনেকেই খান। ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এই বিশেষ ওষুধকে স্বীকৃতি জানিয়েছে। স্তন ক্যানসার সারাতে এটি কাজ করে - গবেষক মেঘনা ত্রিবেদীর লক্ষ্য এই বিশেষ তত্ত্বকে প্রমাণ করা। এর জন্যই আমেরিকান আর্মি মেডিক্যাল রিসার্চ তাঁকে ফান্ড দিয়েছে।
রক্তাচাপের ওষুধ ক্যানসার সারাতে পারে, এ কোনও ভুয়ো দাবি নয়। অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়ার মতো করেও এর গবেষণা শুরু হচ্ছে না। প্রাথমিক পরীক্ষা করে দেখেছেন মেঘনা। জি প্রোটিন কাপলড রিসেপটরকে (জিপিসিআরএস) লক্ষ্য করে, এমন কিছু ওষুধ শনাক্ত করেছেন গবেষক। দেখা গিয়েছে, ওই ওষুধগুলি রক্তচাপ, কিডনি রোগ, অ্যালার্জি ও বুক জ্বালা কমাতে ব্যবহার করা হয়। এই প্রমাণের ভিত্তিতেই গবেষণা শুরু করছেন মেঘনা।
রক্তচাপের ওষুধে ক্যানসার কমলে কী কী সুবিধা ?
- ভারতের মতো অল্প আয়ের দেশগুলিতে ক্যানসার চিকিৎসা প্রচুর খরচসাপেক্ষ। রক্তচাপের ওষুধ কাজ করলে সেই খরচ এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে যাবে।
- দেশের ক্যানসার হার কমবে। বড় সুরাহা হবে সেটি।
- এই ধরনের ওষুধের জটিলতা কম। ফলে সাইড এফেক্টের হারও কমবে।
- গবেষণার ফলাফল ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন দিশা দিতে পারে।
তবে আপাতত সবটাই গবেষণার স্তরে রয়েছে। গবেষণার ফলাফল বেরোনোর পরেও মেডিক্যাল ট্রায়ালের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তার পরই জানা যাবে এই ওষুধ কতটা কার্যকরী।
ডিসক্লেইমার: এই ওষুধ কেউ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাবেন না। বিষয়টি গবেষণার আওতাভুক্ত। এই ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ এবিপি আনন্দ বা ABP live দিচ্ছে না।
আরও পড়ুন - WHO Cancer Report: ক্যানসার নিয়ে নয়া রিপোর্ট দিল WHO, ভারতের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ