বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস 2022:


হেপাটাইটিস হল লিভারের প্রদাহজনিত অসুখ। । হেপাটোট্রপিক ভাইরাসের আক্রমণে এই অসুখ হয়ে থাকে। এই অসুখে কখন আক্রান্ত হয় মানুষ ? যখন হেপাটাইটিস-এ, বি, সি, ডি এবং ই, এই পাঁচটি ভাইরাসের একটির আক্রমণ ঘটে শরীরে। 



  • হেপাটাইটিস এ ভাইরাস (এইচএভি)

  • হেপাটাইটিস বি ভাইরাস (এইচবিভি)

  • হেপাটাইটিস সি ভাইরাস (এইচসিভি)

  • হেপাটাইটিস ডি ভাইরাস (এইচডিভি)

  • হেপাটাইটিস ই ভাইরাস (এইচইভি) 


হেপাটাইটিস ভাইরাসের আক্রমণ ঘটলে, যকৃতের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। এর ফলে রক্তে বিলিরুবিন-এর পরিমাণ বেড়ে যায়। সারা দেহে হলদেটে ভাব আসে।  হেপাটাইটিস গুলির মধ্যে সবথেকে বিপজ্জনক হিসেবে ধরা হয় বি এবং সি ক্যাটেগরির ভাইরাস আক্রান্তদের। হেপাটাইটিস বি ও সি -এ চিকিৎসা ঠিকমতো না হলে, তা বিপজ্জনক দিকে গড়াতে পারে।সময়মতো রোগের চিকিৎসা না হলে,  ক্রনিক হেপাটাইটিস থেকে হতে পারে  সিরোসিস অফ লিভার বা লিভারের ক্যানসারও। পরিসংখ্যান বলছে সারা বিশ্বে এখন প্রায় ৩২৫  মিলিয়ন মানুষ হেপাটাইটিস আক্রান্ত। জেনে নেওয়া যাক হেপাটাইটিস সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য। 



  • হেপাটাইটিস এ, বি, ও ডি কে টিকাদানের দ্বারা প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

  • হেপাটাইটিস এ এবং ই মূলত দূষিত খাবার এবং জলের মাধ্যমে ছড়ায়।

  • দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস সি এর ক্ষেত্রে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধগুলি কাজ করে। 

  • হেপাটাইটিস বি ভাইরাসটি রক্ত কিংবা দেহনিঃসৃত তরলের মাধ্যমে ছড়ায়।

  • হেপাটাইটিস যদি ছয় মাসের মধ্যে সমাধান করা হয় তবে তাকে তীব্র হেপাটাইটিস বলে।

  •  ছয় মাসের বেশি সময় স্থায়ী হলে তাকে দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস বলে।

    হেপাটাইটিস নিয়ে ভুল ধারণাগুলি এড়িয়ে চলুন

    মিথ ১: যদি একজন সংক্রামিত ব্যক্তি আপনাকে চুম্বন করে বা গায়ে থুতু দেয় তবে আপনি সংক্রমিত হতে পারেন


    সত্য: লালার মাধ্যমে একজনের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই । এভাবে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা খুবই বিরল। তবে হেপাটাইটিস আক্রান্তের শরীরের তরল, রক্ত, বীর্য, যৌন সংসর্গ ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়াতে পারে।


    মিথ ২: হেপাটাইটিস একটি বংশগত রোগ


    সত্য: হেপাটাইটিস একটি বংশগত রোগ নয় । উত্তরাধিকারসূত্রে হয় না। কিন্তু হেপাটাইটিস বি জন্মের সময় মা থেকে সন্তানের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং শরীরের তরল এবং কিছু দূষিত খাবার বা জলের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। এছাড়াও, মাকে অ্যান্টিভাইরাল দেওয়ার মাধ্যমে হেপাটাইটিস প্রতিরোধ করা যায় এবং শিশুর জন্মের ১২ ঘন্টার মধ্যে ইমিউনোগ্লোবুলিন ( immunoglobulin )  সহ একটি টিকা দেওয়া যেতে পারে।


    মিথ ৩: হেপাটাইটিস A অন্য ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখে


    সত্য:  না। বেশিরভাগ হেপাটাইটিস এ এবং ই রোগীরা সাধারণত রোগ নির্ণয়ের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠে।  কারণ এটি একটি স্বল্পমেয়াদী সংক্রমণ।  hepatitis A virus (HAV) or HEV য় একবার আক্রান্ত হলে, HAV বা HEV এর বিরুদ্ধে আজীবন সুরক্ষা থাকবে। কিন্তু ভাইরাসের অন্যান্য স্ট্রেইন আক্রমণ করতেই পারে। 


    মিথ ৪: হেপাটাইটিস বি এর কোন চিকিৎসা নেই


    সত্য: হেপাটাইটিসের কোনো প্রতিকার না থাকলেও এটি একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ। এইচবিভি অ্যান্টিভাইরাল দ্বারা চিকিত্সা করা যেতে পারে । 


    মিথ ৫: হেপাটাইটিস A, B এবং C এর জন্য একটি ভ্যাকসিন রয়েছে


    সত্য:  যদিও হেপাটাইটিস A এবং B এর জন্য ভ্যাকসিন পাওয়া যায়, বর্তমানে কোনও টিকাই হেপাটাইটিস সি-র বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ দিতে পারে না।  তবে কেউ হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হলে, রোগীকে হেপাটাইটিস A এবং B এর  টিকা দেওয়া উচিত, কারণ এই সংক্রমণগুলি আপনার লিভারের সমস্যার সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। হেপাটাইটিস সি প্রতিরোধের সবচেয়ে সাধারণ উপায় হল অন্যের টুথব্রাশ, রেজার ইত্যাদি সরঞ্জামের মতো ব্যক্তিগত জিনিসগুলি ভাগ না করে প্রতিরোধ করা। হেপাটাইটিস সি অ্যান্টিভাইরাল দিয়ে চিকিত্সাযোগ্য। 



  • ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।