অমিত ভাটিয়া, নয়াদিল্লি: কোনও ছবিতে যদি একটা খুনের ঘটনা থাকে, সেই ছবিটি যে থ্রিলার হবে, এ তো অজানা নয় একেবারেই। ছবির শুরুতেই একটা খুন আর তারপরে, গোটা ছবি জুড়ে সেই খুনের কিনারা করতে চেষ্টা করে চলেন দর্শকেরা। এমনটাই দস্তুর। সদ্য মুক্তি পাওয়া 'মার্ডার মুবারক' (Murder Mubarak) ছবিটিও ঠিক এমন একটা ছবি, যেটা একবার দেখতে শুরু করলে দর্শক গোটা ছবিটা শেষ না করে উঠতেই পারবেন না। নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া এই ছবি দেখতে দেখতে, দর্শক নিজের অজান্তেই হয়ে উঠবেন গোয়েন্দা, যিনি গোটা ছবি জুড়ে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন, খুনটা কেন হল আর সেটা করলই বা কে?


ছবির গল্প


এই ছবি অদ্ভূত এক ক্লাব নিয়ে। সেই ক্লাবের নাম, দিল্লি রয়্যাল ক্লাব (Delhi Royal Club)। সেই ক্লাবের সদস্যপদ যেমন কয়েক মিলিয়ন ডলার, তেমনই এই ক্লাবের সদস্যপদ পাওয়ার জন্য ওয়েটিং লিস্টে অপেক্ষা করতে করতে অনেকেই কাটিয়ে দেন ২০ বছরও। এই ক্লাবের সদস্যরাও বেশ ধনী, আর ভীষণ অদ্ভূত। এহেন ক্লাবেই একটা খুন হয়ে যায়। এক জিম প্রশিক্ষকের। সেই খুনে কিন্তু মোটেই দুঃখিত নন ক্লাবের কোনও সদস্যই। তবে শোকপ্রকাশ করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সমস্ত ছবি পোস্ট করেছেন ক্লাবের সদস্যরা, সেগুলির মধ্যেও যেন কোনও গড়বড় রয়েছে। এই গল্প যেন পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনও এক পৃথিবীর। যেখানে ভালবাসা রয়েছে, যৌনতা রয়েছে, হিংসা, রাগ আরও অনেক কিছুই রয়েছে যা যা একটা থ্রিলার ছবিতে থাকা উচিত। তবে এর থেকে বেশি কিছু বললে, গল্পের রহস্য় আর আকর্ষণ দুইই চলে যাবে। তাই ছবিটা দেখে ফেলাই ভাল। 


কেমন হল ছবি?


এক্কেবারে শুরুর দৃশ্য থেকেই এই ছবিটা দর্শকদের এক মুহূর্তও পর্দা থেকে চোখ ফেরাতে দেবে না। একটি খুন ও তারপরে সেই খুনের তদন্ত করতে গিয়ে ক্লাবের সদস্যদের জীবনের রহস্য একে একে উন্মোচন হওয়া.. এটাই রয়েছে ছবি জুড়ে। মানবসত্বার বিভিন্ন দিকগুলি তুলে ধরা হয়েছে এই ছবিতে। প্রত্যেকেই যেন মুখোশ পরে রয়েছে। আর সেই মুখোশের আড়ালে রয়েছে অন্য চেহারা। অন্য সত্যি। ছবির এক্কেবারে শেষ পর্যন্ত জিইয়ে রাখা হয়েছে 'খুন কে করেছে' এই প্রশ্নকে।


অভিনয়


এই ছবির অন্যতম নজর কাড়ার মতো বিষয় হল, অভিনয়। অভিনেতা অভিনেত্রীরা প্রত্যেকেই মুগ্ধ করবেন দর্শককে।  ACP-র চরিত্রে পঙ্কজ ত্রিপাঠি দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন নিজস্ব ছন্দে। তাঁর প্রত্যেক কথায়, প্রত্যেককে 'জি' বলার প্রবণতা নজর কেড়েছে আলাদাভাবে। সারা আলি খানের অভিনয়ও নজর কেড়েছে। অভিনেত্রীকে এর আগে এমন চরিত্রে দেখা যায়নি। বিজয় বর্মার অভিনয়ের সুযোগ কম ছিল এই ছবিতে। তবে যতটুকু সুযোগ পেয়েছেন, তিনি তাঁর মর্যাদা রেখেছেন। এই ছবিতে নজর কেড়েছেন করিশ্মা কপূর। তিনি যে কতটা দক্ষ অভিনেত্রী, তা যেন প্রমাণ করে দিয়েছেন এই ছবিতে। মহারাজার চরিত্রে সঞ্জয় কপূরকে দূর্দান্ত মানিয়েছে। ডিম্পল কাপাডিয়া নিজস্ব অভিনয় দক্ষতায় ছবিতে অন্য মাত্রা এনেছেন। আলাদাভাবে উল্লেখ করার দাবি জানায় টিসকা চোপড়ার পারফরম্যান্স।


পরিচালনা


পরিচালক Homi Adajania-র অন্যতম সেরা কাজ বলা চলে এই ছবিকে। গোটা ছবি জুড়ে রহস্যের এক্কেবারে সফল একটি জাল বুনেছেন পরিচালক। প্রত্যেকটা চরিত্র নিজের নিজের মতো করে অনন্য। একগুলো চরিত্রকে সমান গুরুত্ব দিয়ে এমন সফল রহস্যের জাল বোনা মুখের কথা নয়। যদি আপনি একটি মনকাড়া থ্রিলার দেখতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনার তালিকায় থাকতে পারে মার্ডার মুবারক' । 


আরও পড়ুন: Madhubala Biopic: এবার সেলুলয়েডে 'মধুবালা'র জীবনী, ঘোষণা হল বায়োপিকের, পরিচালনায় কে?