মুম্বই: মহারাষ্ট্রের পালঘরে গত ১৬ এপ্রিল ২ সাধু সমেত তিনজনকে গাড়ি থেকে টেনে বের করে গণপিটুনিতে খুনের ঘটনায় এপর্যন্ত ১০১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু এদের মধ্যে একজনও মুসলিম নেই। এই তথ্য পেশ করে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ গণপিটুনিতে হত্যায় সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার অভিযোগে বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্যের বিরোধী শিবিরকে কাঠগড়ায় তোলেন। তাদের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি না করার আবেদন জানান তিনি। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সোস্যাল ডিস্ট্যান্সিং মেনে ফেসবুকের মাধ্যমে সাংবাদিক সম্মেলন করেন দেশমুখ। সেদিনের মর্মান্তিক, নৃশংস হিংসাত্মক ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব মহারাষ্ট্র সিআইডিকে (ফৌজদারি তদন্ত শাখা) দেওয়ার কথা নিশ্চিত করেন তিনি।
বিজেপি শিবিরকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, কিছু লোক ‘মুঙ্গেরিলাল কে হাসিন স্বপ্নে’ দেখতে মগ্ন। কিন্তু এখন রাজনীতি নয়, একসঙ্গে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময়।
প্রসঙ্গত, মুম্বইয়ের ১২৫ কিমি দূরে তিনজনকে লাঠি, রড, পাথরের ঘায়ে উন্মত্ত জনতার মেরে ফেলার ঘটনাটি লোক চিনতে ভুল করে ফেলার ফল হতে পারে বলে অনুমান প্রকাশ করেছেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। সোমবার তিনিও ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক চেহারা না দেওয়ার আবেদন করেন। মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকে ট্যুইট করা হয়, ধর্মীয় আবেগে উসকানি দেওয়ার চেষ্টা থেকে বিরত থাকুন। এই হামলায় কোনও হিন্দু-মুসলিম বিবাদ বা সাম্প্রদায়িক বিষয়ই নেই। দুজন পুলিশকর্মীকে সঙ্গে সঙ্গে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
সেদিনের ঘটনার ভাইরাল হওয়া ভয়ঙ্কর ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তিনজনের ওপর চড়াও হচ্ছে গাডচিঞ্চালে গ্রামের মারমুখী বাসিন্দারা। তাদের হাতে রড, লাঠি, পাথর। পুলিশও পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়। কয়েকজন পুলিশকর্মী জখম হন। আরও কিছু ভিডিওতে গ্রামবাসীদের একটি পুলিশের গাড়ির কাচ ভেঙে, সেটি ঠেলে উল্টে দিতে দেখা যাচ্ছে।
নোভেল করোনাভাইরাস ছড়ানো ঠেকাতে সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে চালু হওয়া লকডাউনের সুযোগ নিতে এসেছে চোরেরা, এমন গুজবের জেরেই গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছে পুলিশ। এলাকা থেকে বাচ্চা চুরির গুজবও ছড়ায় বলে দাবি করেন জেলা কালেক্টর কৈলাস শিন্ডে।