কলকাতা: গোটা দেশকে আবেগে ভাসিয়েছে তাঁর ও তাঁর স্ত্রী-এর প্রেম কাহিনি। বিধুবিনোদ চোপড়ার ‘টুয়েলফথ ফেল’-এর কথাই হচ্ছে। কেরিয়ারের পাশাপাশি প্রেমেও সফল হওয়া যায়। সেটাই দেখিয়ে দিয়েছে মনোজ শর্মা ও শ্রদ্ধা জোশীর জুটি। রিয়েল জগতের সেই মনোজ শর্মাকেই এবার সম্মান জানাবে ভারত সরকার। ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের সন্ধ্যায় ‘মেডাল ফর মেরিটরিয়াস’ সার্ভিস-এর পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে তাঁর হাতে। এছাড়াও, দমকল পরিষেবার জন্য ৩২ জন অফিসারকে একই সম্মানে সম্মানিত করা হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতিতে মনোজ শর্মা
প্রজাতন্ত্র দিবসের আগেই ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। বুদ্ধিদীপ্ত পরিষেবা দেওয়ার জন্য় ৩৭ জন সিআইএসএফ পার্সোনেলদের বেছে নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেই তালিকাতেই নাম রয়েছে ২০০৫ সালের ব্যাচের আইপিএস অফিসার মনোজ শর্মার (IPS Manoj Kumar Sharma)। বর্তমানে মনোজ শর্মা সিআইএসএফ (সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স)-এর দায়িত্বে রয়েছেন। ফোর্সের উড়ান নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভাগের (অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি উইং) দায়িত্বে রয়েছেন। মনোজ শর্মাসহ সিআইএসএফ-এর আরও ২৪ জন অফিসারকে মেডাল ফর মেরিটরিয়াস সার্ভিস সম্মানে ভূষিত করা হবে। এছাড়াও, দমকল পরিষেরার জন্য ৩৩ জন অফিসারকে একই সম্মানে ভূষিত করা হবে।
‘টুয়েলফথ ফেল’
প্রসঙ্গত, বিধুবিনোদ চোপড়ার ‘টুয়েলফথ ফেল’ অনুরাগ পাঠকের একটি উপন্যাসের ভিত্তিতে নির্মিত। সেই উপন্যাসটি আবার মনোজ শর্মা ও শ্রদ্ধা জোশীর বাস্তব জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লেখা। মনোজ যেমন ২০০৫ সালের ব্যাচের আইপিএস অফিসার, তেমনই শ্রদ্ধা (IRS Shraddha Joshi) ২০০৭ সালের ব্যাচের ইন্ডিয়ান রেভিনিউ অফিসার।
অটোচালক থেকে আইপিএস
ছোট থেকেই গড়পড়তা পড়ুয়া ছিলেন মনোজ। কোনওরকমে ক্লাস টেন পাশ করেন। ক্লাস টুয়েলভ পাশ করার সময় নকল করতে পারেননি। পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোলে দেখা যায়, হিন্দি বাদে বাকি সব বিষয়েই ফেল করেছেন। ক্লাস টুয়েলভের পর তাই আর চাকরি পাননি। অটো নিয়ে নেমে পড়েন রাস্তায়। মধ্যপ্রদেশের মোরেনার বাসিন্দা মনোজের অটো একবার আটক করা হয়। মহকুমা শাসকের কাছ থেকে অটো ছাড়াতে যান তিনি। কিন্তু সেখানেই কথা শুরু হয়ে যায় ইউপিএসসি পরীক্ষা নিয়ে। এর পর জীবনের পথ অন্যদিকে ঘুরে যায়। গোয়ালিয়রে চলে যান মনোজ। সেখানে কখনও কখনও বড়লোকের কুকুরের দেখভাল করে, কখনও টেম্পো চালিয়ে ইউপিএসসি-এর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। প্রথম তিনবার পরীক্ষায় ফেল করেন মনোজ। তবে চতুর্থবারের চেষ্টায় ১২১ র্যাঙ্ক করেন। আইপিএস মনোজ কুমার শর্মার জীবনে লড়াইটাই শেষ কথা। লড়াই করলে যে অনেক কঠিন ধাপ সহজে পেরোনো যায়, তা-ই প্রমাণ করে দিয়েছেন তিনি। কর্মজীবনেও তাঁর অসামান্য কৃতিত্বের জন্য আজ তাঁকে স্বীকৃতি জানানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন - IAS success story: ভুল ওষুধ চোখ কাড়লেও কাড়তে পারেনি জেদ! অধ্যাপনা করেও UPSC-তে সেরা র্যাঙ্ক সতেন্দরের