হরিয়ানা: জ্বর-সর্দি-কাশি যাই থাকুক। করোনা উপসর্গ থাকলেও গ্রামে ঢুকতে দেওয়া যাবে না স্বাস্থ্যকর্মীদের। করোনা পরীক্ষা--- নৈব নৈব চ। এই মর্মে প্রস্তাব পাশ করেছে হরিয়ানার দুটি গ্রাম। সেপ্টেম্বরে হরিয়ানার ফতেহাবাদ জেলার দুটি গ্রামে করোনা পরীক্ষায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। স্বাস্থ্যকর্মীরা ঢুকতে গেলে তাঁদের বাধা দেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের সঙ্গে থাকা টেস্টিং কিট ভেঙে দেন তারা। তামাসপুরা ও আলিপুর ভারোতা গ্রাম পঞ্চায়েত ৬ অক্টোবর প্রস্তাব পাশ করেছে। দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান (সরপঞ্চ) বলম সিংহ ও ময়না দেবী সেই প্রস্তাবে সই করেছেন। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে কোনও সরকারি স্বাস্থ্যকর্মীকে করোনা পরীক্ষার জন্য গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হবে না। কেন এমন সিদ্ধান্ত?
তামাসপুরা পঞ্চায়েত প্রধান বলম সিংহ জানিয়েছেন, গ্রামবাসীরাই তাঁকে এমন অনুরোধ করেছিলেন। তাঁর কথায়, গ্রামবাসীরা সকলেই সুস্থ। তাঁদের আশঙ্কা যদি কোনও উপসর্গহীন সরকারি আধিকারিক তাঁদের গ্রামে করোনা পরীক্ষার জন্য ঢোকেন, তা হলে তাঁর থেকে গ্রামের মানুষ সংক্রমিত হয়ে যেতে পারেন।এখন আমরা গ্রামবাসীদের সচেতন করার চেষ্টা করছি। তবে প্রতিক্রিয়া জানার জন্য ময়না দেবীকে পাওয়া যায়নি।
গ্রামবাসীদের আরও আতঙ্ক কারও যদি করোনা ধরা পড়ে, তাহলে তাঁকে স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়ে চলে যাবেন। তাতে আরও আতঙ্ক ছড়িয়ে প়ড়বে গোটা গ্রামে।
গত মাসে নাকতা গ্রামে একই ধরনের ঘটনা ঘটে। করোনা পরীক্ষা করতে যাওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের বাধা দেওয়া হয়। টেস্টিং কিট জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। সরকারি আধিকারিকদের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে।
এক স্বাস্থ্যকর্মী জানিয়েছেন, গ্রামবাসীদের অনেকের মনেই ভুল ধারণা বাসা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, করোনায় কোয়ারান্টিন ও চিকিৎসা পরিষেবার সঠিক বন্দোবস্ত নেই। এমনকি করোনার কোনও ওষুধ নেই বলেও তাঁদের বিশ্বাস। মানুষের এই ধারণা নির্মূল করতে কিছুটা সময় লাগবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ ধরনের খবর সামনে আসতেই পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। ফতেহাবাদের ডেপুটি কমিশনার নরহরি সিংহ বানদার জানিয়েছেন ওই দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করতে জেলা উন্নয়ন ও পঞ্চায়েত আধিকারিককে নির্দেশ দিয়েছেন।
সরকার যেখানে কোভিড সংক্রমণ কমাতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে। সেখানে এ ধরনের পদক্ষেপ কোনও পঞ্চায়েত কী করে করতে পারে তা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন জেলা উন্নয়ন ও পঞ্চায়েত আধিকারিক।