নয়াদিল্লি: ব্য়াঘ্র সংরক্ষণের ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। এ বার দেশের মোট ব্যাঘ্রসুমারির রিপোর্ট প্রকাশ করল কেন্দ্রীয় সরকার (Tiger Census)। তাতে দেখা গিয়েছে, ২০১৮ সালে দেশে মোট বাঘের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৬৭। তার পর দীর্ঘ দিন ব্যাঘ্রসুমারির ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Natendra Modi) জানালেন, ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে মোট বাঘের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ১৬৭ (Tiger Population)।


রবিবার পঞ্চম পর্যায়ে দেশের ব্যাঘ্রসুমারির রিপোর্ট প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তাতে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের গণনা অনুযায়ী, এই মুহূর্তে দেশে মোট বাঘের সংখ্যা ৩ হাজার ১৬৭। এর আগে, ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ২০১৮-র ব্যাঘ্রসুমারি সামনে এসেছিল। সে বার দেশে ২ হাজার ৯৬৭টি বাঘ রয়েছে বলে জানানো হয়। অর্থাৎ গত চার বছরে দেশে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে ২০০। 


এর আগে, ২০০৬ সালে দেশে মোট বাঘের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪১১। ২০১০ সালে তা বেড়ে হয় ১ হাজার ৭০৬টি। ২০১৪ সালে তা আরও বেড়ে পৌঁছয় ২ হাজার ২২৬-এ। এ দিন কর্নাটকের মহীশূরে ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাট অ্যালায়েন্স সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই উপলক্ষেই প্রকাশিত হয় ২০২২ সালের ব্যঘ্রসুমারি।



ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের ৫০ বছর পূর্তিতে ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাট অ্যালায়েন্স সম্মেলনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী, দেশে যা এই প্রথম। তিন দিনের এই সম্মেলনে বিশ্বের সর্বত্র ব্যাঘ্র নিরাপত্তা, সংরক্ষণ নিয়ে বিশদ আলোচনা হবে। শুধু বাঘই নয়, সিংহ, চিতা, তুষারচিতা, চিতাবাঘ, বনবিড়াল, জাগুয়ার সংরক্ষণের উপরও জোর দেওয়া হচ্ছে।


বেআইনি শিকার, বন্যপ্রাণী পাচার চক্রকে রুখতে ২০১৯ সালেই বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রনেতাদের ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এ দিন সম্মেলন উদ্বোধনের আগে বন্দিপুর ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রেও যান তিনি। ঘুরে দেখেন মুড়ুমালাই ব্য়াঘ্র সংরক্ষণের অন্তর্গত থেপ্পাকাড়ু হস্তিশিবিরও। 


এ দিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, "ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। ওই প্রকল্পের সাফল্য শুধুমাত্র ভারতের মধ্যেই সীমিত নেই। গোটা বিশ্বে এর প্রভাব পড়েছে। ভারত শুধু বাঘের প্রাণরক্ষাই করেনি, উপযুক্ত বাস্তুতন্ত্র গড়ে তুলেছে, যেখানে তাদের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটে। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে এই মুহূর্ত তাই অত্যন্ত আনন্দের। কারণ বিশ্বের মোট ব্যাঘ্র জনসংখ্যার ৭৫ শতাংশ ভারতের ৭৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার ব্যাঘ্র সংরক্ষণভূমিতেই লালিত পালিত।  প্রত্যেকের যোগদানেই এই মাইলফলক ছোঁয় সম্ভব হয়েছে।"


এ দিন প্রধানমন্ত্রী জানান, হাজার হাজার বছর ধরে ভারতীয় সংস্কৃতির অঙ্গ বাঘ। মধ্যপ্রদেশের গুহার অন্দরে ১০ হাজার বছর পুরনো চিত্রশিল্পেও বাঘের দেখা মেলে।  বিশেষ করে দেশের জনজাতি সম্প্রদায়ের সঙ্গে বাঘের সংযোগের কথা তুলে ধরেন তিনি। জানান, দেশের বহু সম্প্রদায়ের মানুষ বাঘকে পুজো করেন। শুধু বাঘই নয়, দেশে সিংহ, চিতা, হাতি, গন্ডারের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান তিনি। জানান,এ ই মুহূর্তে এশিয়াটিক হাতি, এক শিং বিশিষ্ট গন্ডারে সংখ্যায় ভারতই এগিয়ে। একমাত্র ভারতেই এশিয়াটিক সিংহের দেখা মেলে।