কলকাতা: দেশজুড়ে লাগামছাড়া করোনা সংক্রমণ। ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯৬ লক্ষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১লক্ষ ৩৯ হাজারের গণ্ডি। রাজ্যেও অব্যাহত করোনার দাপট। শুক্রবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংখ্যাটা ছিল ৪৯, বুধবার ৫১।

শুক্রবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ২০৬ জন। বৃহস্পতিবার সংখ্যাটা ছিল ৩ হাজার ২৪৬ জন। বুধবার ৩ হাজার ২৭১। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যুর নিরিখে শীর্ষে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সংক্রমণে শীর্ষে কলকাতা।

শুক্রবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায়  উত্তর ২৪ পরগনায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ১দিনে কলকাতায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭৯৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ২৪ পরগনায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৯৪ জন। এই নিয়ে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ৪ লক্ষ ৯৬ হাজার ৫২২ জন। এখনও অবধি মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ৬২৮ জনের। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪ লক্ষ ৬৩ হাজার ৮৪৯ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২১৫ জন। সুস্থতার হার ৯৩.৪২ শতাংশ।

মারণ এই ভাইরাস ঘিরে যেন ত্রাহি ত্রাহি রব উঠে গিয়েছে গোটা বিশ্বে। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়। লোক মুখে এখন একটাই প্রশ্ন, ভ্যাকসিন আসবে কবে? এই পরিস্থিতিতে অবশেষে করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আশার কথা শোনা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গলায়। শুক্রবার দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সর্বদলীয় বৈঠক হয়। সেখানে তৃণমূল-সহ বেশিরভাগ দলেরই প্রতিনিধিদের মুখে ছিল একটাই প্রশ্ন, ভারতে যে কয়েকটি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চলছে তার সর্বশেষ পরিস্থিতি কী? দেশবাসীর জন্য কবে বাজারে আসবে করোনার ভ্যাকসিন?

ভারতে এখন মোট ৮টি ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চলছে। তার মধ্যে তিনটি ভ্যাকসিন তৈরির নেপথ্যে ভারতীয় সংস্থা। সেগুলির বিভিন্ন পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। গত ২৮ নভেম্বর আমদাবাদ, হায়দরাবাদ ও পুণেতে গিয়ে সেই তিন ভ্যাকসিন তৈরির প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। এদের মধ্যে রয়েছে ভারতীয় সংস্থা জাইডাস ক্যাডিলার তৈরি ভ্যাকসিন ZyCoV-D। আমদাবাদের ল্যাবে এই ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা করছে। প্রথম পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ করেছে জাইডাস ক্যাডিলা। অগস্ট থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। Indian Council of Medical Research বা ICMR এবং National Institute of Virology বা NIV-র সহযোগিতায় কোভ্যাক্সিন তৈরি করেছে হায়দরাবাদের সংস্থা ভারত বায়োটেক। ট্রায়ালের তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে কোভ্যাক্সিন। সম্প্রতি কলকাতার নাইসেডে কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হয়। অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে এদেশে করোনার তৃতীয় ভ্যাকসিনটি তৈরি করছে সিরাম ইনস্টিটিউট। তবে যতদিন না পর্যন্ত ভ্যাকসিন আসছে, ততদিন করোনাবিধি মেনে চলার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি তিনি দেশে কোনও বড়মাপের টিকাকরণ শুরু হলে তা নিয়ে একটা অংশের অপপ্রচার, বা গুজব নিয়ে এদিন সাবধান করে দেন।