নয়াদিল্লি: নোট বাতিল নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার বার্ষিক প্রতিবেদনে বড়সড় তথ্য সামনে এল। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, ডিমনিটাইজেশনের সময় ১৫ লক্ষ ৪১ হাজার কোটি টাকার নোট বাতিল হয়েছিল। তার মধ্যে ১৫ লক্ষ ৩১ হাজার টাকার নোটই ফেরত এসেছে। মাত্র ১০ হাজার ৭২০ কোটি টাকা ব্যাঙ্কিং সিস্টেমে ফিরে আসেনি।নোট বাতিলের পর ফেরত আসা নোট গুণে উঠতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক দীর্ঘ সময় নিয়েছে। ২০১৭-১৮-র বার্ষিক রিপোর্টে ওই গণনার কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়ে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টে এই চূড়ান্ত তথ্য প্রকাশের পর বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে যে যদি বাতিল ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের ৯৯.৩ শতাংশই ফিরে আসে, তাহলে নোটবন্দীতে লাভটা কী হল। তাঁদের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন যে, নোটবন্দীর ফলে সিস্টেম থেকে কালো টাকা বাইরে চলে যাবে। কিন্তু এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট যে, নোটবন্দী ব্যর্থ হয়েছে।
কংগ্রেস মুখপাত্র প্রশ্ন করেছেন, তাহলে নোটবন্দীতে লাভ কী হল? তিনি বলেছেন, অরুণ শৌরি যথার্থই বলেছিলেন যে, নোটবন্দীর মতো আর্থিক কেলেঙ্কারি ভারতের ইতিহাসে আর হয়নি। অনেকেই আগেভাগেই বলে দেওয়া হয়েছিল। সেজন্য তারা তাদের কালো টাকা সাদা করে নিয়ে পেরেছিল। অন্যদিকে ব্যাঙ্কে টাকা তোলার লাইনে দাঁড়িয়ে যে ১৪০ জনের মৃত্যু হল, তা নিয়ে কেউ অনুশোচনা প্রকাশ করেনি। নোট বাতিলের ফরে অর্থ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে যায়। সঞ্জয় ঝা আরও বলেছেন, নোট বাতিলের নামে দেশবাসীর সঙ্গে তামাশা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখে এখন নোট বাতিল ও অচ্ছে দিনের কথা শোনা যায় না।

কংগ্রেসের এই অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে বিজেপি মুখপাত্র জাফর ইসলাম বলেছেন, নোট বাতিলের আসল উদ্দেশ্যটাই বিরোধীরা বুঝতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী একটি মাত্র পদক্ষেপেই একাধিক লক্ষ্য পূরণ করেছেন। নোট বাতিলকে সংগঠিত সংস্কার হিসেবে দেখা উচিত। এমন কথা বলা হয়নি যে, বাতিল নোট ফিরে আসবে না। সেইসঙ্গে বলতে হবে ওই অর্থ কোথা থেকে এসেছে। তার হিসেবও দিতে হবে। সেই সব হিসেব চলছে এবং অর্থের উত্সের ব্যাখা না দিতে পারলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৬-র ৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণা করেছিলেন। বাতিল নোট বদলের জন্য ৫০ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। নোট বাতিলের পর পুরানো নোট বদলের জন্য ব্যাঙ্কগুলিতে দীর্ঘ লাইন দেখা দিয়েছিল।