নয়াদিল্লি: মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরই আফগানিস্তান ফের কব্জায় নিয়েছে তালিবান। সেখানে ফিরে এসেছে ২০ বছরের আগেকার আতঙ্কের পরিবেশ। বর্বরতা ও আতঙ্কের পরিবেশে প্রচুর লোকজন আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়ে আসতে চাইছেন। এরইমধ্যে আফগানিস্তানে আটক ভারতীয়দের এয়ার লিফ্ট করে দেশে ফিরিয়ে আনার মিশন অব্যাহত রয়েছে।
সূত্রের খবর, অপারেশন এয়ারলিফ্টের জন্য ১৫ অগাস্টের আগেই প্রস্তুতি চলছিল। কাবুলে ভারতীয় দূতাবাসের ৭০ মিটার দূরেই ১৫ অগাস্ট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছিল। আর এই কারণেই সেখানে ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দানা বেঁধেছিল।আর এরপরই শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। তালিবানের নজর এড়িয়ে ১৫০ জনকে এয়ারলিফ্ট করে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়।
তৈরি হয়েছিল দুটি দল
কাবুলের বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনতে দুটি দল তৈরি হয়। এরমধ্যে একটি দলে ছিলেন ৪৬ জন। তাঁদের ১৬ আগস্ট নিয়ে আসা হয়েছিল। অন্যদিকে, দ্বিতীয় দলে ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রদূত. ৯৯ আইটিপিবি কমান্ডো, তিন মহিলা ও দূতাবাসের কর্মী। ১৭ অগাস্ট ১৫০ জনকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল।
সূত্রের খবর, কাবুল থেকে তাঁদের নিয়ে আসার প্রথম প্রচেষ্টা ১৫ অগাস্ট হয়েছিল। ওইদিন বিমানবন্দরের দিকে সবাই রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু পৌঁছতে পারেননি। একটি চেকপয়েন্টে দেখা গিয়েছে সশস্ত্র তালিবানকে। ফলে ১৫ অগাস্ট ওই দলকে দূতাবাসে ফেরত আসতে হয়।
১৬ অগাস্ট ফের একবার চেষ্টা করা হয়। বিকেল চারটেয় বিমানবন্দরের দিকে রওনা হওয়ার সময় দূতাবাসের বাইরে দেখা যায় সশস্ত্র তালিবানকে। এমন পরিস্থিতিতে ১৫ কিলোমিটার দূরের বিমানবন্দরের দিকে রওনা দেওয়াটা ছিল যথেষ্টই চ্যালেঞ্জের।
যেভাবে নজর এড়ানো হয়
যদিও চেষ্টা চলছিলই। রাত সাড়ে দশটায় ফের দল এয়ারবেসের দিকে রওনা দেয়। সশস্ত্র তালিবানের নজর এড়িয়ে গভীর রাত সাড়ে তিনটেয় এয়ারবেসে পৌঁছয় দল। ওই সময় পথে ছিল প্রচুর মানুষের ভিড়। আর রাস্তার জায়গায় জায়গায় ব্যারিকেড তৈরি করে চলছিল তালিবানের চেকিং। সূত্রের খবর, দূতাবাসের লোকজনকে বিমানবন্দরে নিরাপদে পৌঁছে দিতে প্রায় ১৪ টি বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছিল।
৫৬ ঘণ্টা কারুর চোখে ঘুম ছিল না
সি-১৭ বিমান সকাল ভোর সাড়ে পাঁচটায় পাড়ি দেয়। আর সকাল সোয়া এগারোটায় গুজরাতে অবতরণ করে। সেখানে এই দলকে মহা উৎসাহে স্বাগত জানানো হয়। এরপর হিন্ডন এয়ারবেশে নিয়ে আসা হয়। ৫৬ ঘণ্টায় এই ঘটনাক্রমের সময় কারুর চোখেই ঘুম ছিল না। কেউ খাবারও খাননি।