নয়াদিল্লি: দেশবিরোধী-মন্তব্য করার জন্য জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন পড়ুয়া শারজিল ইমারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা আইনে মামলা দায়ের করল দিল্লি পুলিশ। দিল্লির শাহিন বাগে সংশোধিত নাগরিক আইন (সিএএ) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-আন্দোলনের অন্যতম মূল উদ্যোক্তা শারজিলের একটি ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়। সেখানে তাঁকে ভারত থেকে অসম সহ উত্তর-পূর্ব ভারতকে বিচ্ছিন্ন করার ডাক দিতে শোনা গিয়েছে। এরপরই, শারজিলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেয় একাধিক রাজ্য প্রশাসন।
শনিবার, আধুনিক ভারতীয় ইতিহাসের পড়ুয়া শারজিলের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ রোধ আইন(ইউএিপএ) ধারায় মামলা দায়ের করে অসম পুলিশ। মামলা দায়ের করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশও।  পাশাপাশি, তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, ধর্মের ভিত্তিতে উস্কানি দেওয়া, প্ররোচনা, হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা সহ একাধিক অভিযোগও আনা হয়েছে।  শারজিলের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন এমআইএম-এর শীর্ষ নেতা আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। তিনি বলেছেন, ভারত কোনও ‘চিকেন নেক’ নয় যে তাকে ভেঙে বা আলাদা করে দেওয়া যাবে।





ইতিমধ্যেই, শারজিলকে গ্রেফতার করতে দুটি টিম পাঠিয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। আলিগড়ের পুলিশ সুপার আকাশ কুলহারি জানান, তাঁরা দিল্লি ও বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন শারজিলের গতিবিধির ওপর। যে ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে, সেখানে শারজিলকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘আমাদের যদি ৫ লক্ষ সংগঠিত কর্মী থাকে, তাহলে আমরা অন্তত একমাসের জন্য উত্তর-পূর্বকে বাকি দেশ থেকে আলাদা করে দিতে পারি। আমরা একটা রাস্তা একমাস ধরে আটকে দিয়েছি, ওরা সরাতে পারছে না। এটা আমাদের দায়িত্ব অসমকে দেশ থেকে আলাদা করা। তবেই ওরা আমাদের কথা শুনবে।’





এখানেই থেমে থাকেননি শারজিল। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে তাঁকে আরও বলতে শোনা গিয়েছে, ‘আপনারা জানেন অসমীয়া মুসলিমদের সাথে কী হচ্ছে? সেখানে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) কার্যকর হয়েছে। ওদের ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছে। আর ৬-৮ মাসের মধ্যে হয়ত জানতে পারব, সেখানে সব বাঙালিদের -- তা সে হিন্দু হোক বা মুসলিম-- হত্যা করা হয়েছে। আমরা যদি অসমকে সাহায্য করতে চাই, তাহলে অসমগামী রুট বন্ধ করে দিতে হবে, যাতে ভারতীয় সেনা সেখান দিয়ে কোনও রসদ না নিয়ে যেতে পারে।’
শারজিলের এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেন অসমের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। শনিবার তিনি বলেন, রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই প্রতিবাদী শারজিল ইমামের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহী মন্তব্য করার জন্য মামলা দায়ের করবে। তিনি বলেন, অসম সরকার এই মন্তব্যকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিচার করছে। ভিডিও ক্লিপটি ট্যুইট করে তিনি বলেন, এভাবেই প্রকাশ্যে দেশে অশান্তি ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। মামলা দায়ের করছে মণিপুর সরকারও।