ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লি: ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই চাইলে তিনি অবশ্যই কাশ্মীর ইস্যুতে তাদের মধ্যে সালিশি করবেন বলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানানোর পর নয়াদিল্লি স্পষ্ট বলে দিল, মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যস্থতার প্রস্তাব কখনই মানবে না। মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পিওকে ভারতের অবস্থান জানিয়ে দিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, এই ইস্যুতে আদৌ কোনও আলোচনার দরকার হলে তা শুধুমাত্র হবে পাকিস্তানের সঙ্গেই এবং কেবলমাত্র দ্বিপাক্ষিক স্তরেই।
গতকালের মন্তব্যে ফের কাশ্মীর বিতর্ক উসকে দিলেন ট্রাম্প, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। মাত্র কয়েকদিন আগে গোটা দুনিয়াকে চমকে দিয়ে তিনি আমেরিকা সফরে যাওয়া পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠকে দাবি করেন, জাপানে হওয়া জি-২০ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে কাশ্মীর প্রশ্নে মধ্যস্থতার অনুরোধ করেছিলেন। তিনিও মধ্যস্থতায় রাজি। পাকিস্তান যদিও ট্রাম্পের বক্তব্যকে স্বাগত জানায়, কিন্তু ভারতে এ নিয়ে তুমুল শোরগোলের মধ্যে কেন্দ্রের তরফে জয়শঙ্কর সংসদে দাঁড়িয়ে জানিয়ে দেন, প্রধানমন্ত্রী কখনই এহেন অনুরোধ করেননি। তাঁর ও ট্রাম্পের আলোচনায় কাশ্মীর প্রসঙ্গ ওঠেইনি। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহও বলেছিলেন, দেশের আত্মমর্যাদার প্রশ্নে আপস করতে পারব না আমরা।
যদিও তখনকার মতো সেই বিতর্ক থিতিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার ফের কাশ্মীর নিয়ে মুখ খোলেন ট্রাম্প। ইমরানের সঙ্গে গত মাসের বৈঠকের উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাশ্মীর সমস্যা মেটানোর বিষয়টি ভারত, পাকিস্তানের হাতে। তবে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী সমাধানের জন্য তাঁর হস্তক্ষেপ চাইলে তিনি রাজি। কী ভাবে তিনি কাশ্মীর ইস্যু মেটাতে চান, জানতে চাওয়া হলে ট্রাম্প বলেন, ওরা আমাকে চাইলে পারলে আমি অবশ্যই হস্তক্ষেপ করব। তবে ভারতের তাঁর মধ্যস্থতার প্রস্তাব মানতে রাজি না হওয়া নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা মেনে নেওয়াটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্যাপার। ওরা কি প্রস্তাবটা মেনেছে না মানেনি?
পাশাপাশি ট্রাম্প বলেন, আমার মতে, ওঁরা মানে খান ও মোদি, দুজনেই চমত্কার মানুষ। কল্পনায় ভাবি, ওঁরা দারুণ ভাবে একসঙ্গে চলতে পারবেন। তবে যদি ওঁরা চান, কেউ ওঁদের সাহায্য করুন, হস্তক্ষেপ করুন এবং এ নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, ভারতের সঙ্গেও খোলাখুলি কথা বলেছি।
কাশ্মীর ইস্যু দীর্ঘকাল ধরে অমীমাংসিত রয়েছে বলে আক্ষেপও জানান ট্রাম্প। বলেন, ওই সংঘাত চলতে তো চলছেই, দীর্ঘদিন ধরে।



ট্রাম্পের বক্তব্যে চাঞ্চল্য ছড়ানোয় ব্যাঙ্কক থেকে বিদেশমন্ত্রী ট্যুইট করেন, আজ সকালে মার্কিন বিদেশসচিব পম্পিওকে পরিষ্কার জানিয়েছি, কাশ্মীর নিয়ে কথা হলে শুধুমাত্র পাকিস্তানের সঙ্গেই, দ্বিপাক্ষিক স্তরে হবে। দুজনেই পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের সম্মেলনে সেখানে রয়েছেন।
এদিকে মার্কিন বিদেশ দপ্তরের জনৈক কর্তাকে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানিয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আমেরিকা উন্নত, সুন্দর সম্পর্ক দেখতে চায় বলেই সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।