কী ভাবে চেনা যাবে, কোন দ্রব্য এসেছে চিন থেকে?


সব জিনিসে তো আবার লেখাও থাকে না 'মেড ইন চায়না'। জল্পনা, চিন-ভারত টানাপোড়েনের আবহে, বিক্রি হবে না, এই ভয়ে অনেক চিনা দ্রব্যতেও 'মেড ইন চায়না' লেখা থাকছে না। করোনা আতঙ্কে এমনিই ভাটা পড়েছিল চিনা দ্রব্যের চাহিদায়, সবাই রোগের ভয়েই এড়িয়ে চলছিলেন চিনা জিনিস। সম্প্রতি আবার লাদাখে ভারতীয় সেনাদের উপর চিনা আগ্রাসন, চিনা জিনিসের উপর অনীহা বাড়িয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পপুলার হয়েছে বহু হ্যাশ ট্যাগ। #boycottchinaproducts হ্যাশট্যাগ ব্যহার করে একটি পোস্ট খুবই শেয়ার করা হচ্ছে। যেমন, কোনও দ্রব্যের বারকোড যদি ৬৯০ থেকে ৬৯৯ এর মধ্যে কোনও সংখ্যা দিয়ে শুরু হয়, তাহলে বুঝতে হবে জিনিসটি চিনের। আর ভারতীয় দ্রব্যের বারকোড শুরু ৮৯০ দিয়ে।
কতটা সত্যতা আছে, এই দাবিতে?
গবেষণা বলছে, বারকোডের প্রথম তিন সংখ্যা দেখে জিনিসটি কোথায় তৈরি সে বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসাই যায় না। এটাও ঠিক বারকোডের ৬৯০ থেকে ৬৯৯ অবধি সংখ্যা চিনের জন্য নির্দিষ্ট। তবে এমনও নয়, ওই তিনটি সংখ্যা দিয়ে বারকোড শুরু হওয়া মানেই, তা চিন দেশে তৈরি।



তাহলে, বার কোড কীভাবে কাজ করে?
কোনও দ্রব্যের লেবেলে যে সাদা কালো সরু সরু উলম্ব রেখা থাকে, তাকে বার কোড বলে। এই বারকোড নির্দিষ্ট মেশিন স্ক্যান করতে পারে। এর মাধ্যমে দ্রব্য সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য মেলে। এরসঙ্গে থাকে একটি প্রোডাক্ট নম্বর, যার নাম গ্লোবাল ট্রেড আইটেম নাম্বার (GTIN)। GS1 নামে এক আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্রব্যের প্রস্তুতকারকদের এই ইউনিক নম্বর ও বারকোড দেয়।


বারকোডের প্রিফিক্স বা প্রথম তিন সংখ্যা কী ইঙ্গিত করে?
বারকোডের প্রথম তিনটি সংখ্যা অবশ্যই জরুরি। যদিও এই নম্বর কিন্তু কোন দেশে দ্রব্যটি তৈরি তার ইঙ্গিত দেয় না, বোঝায় এর প্রস্তুতকারক সংস্থাটির শিকড় কোথায়। অর্থাৎ GS1 প্রিফিক্স দেখে শুধুমাত্র এটুকুই বোঝা যায়, এই জিনিসটি যেখান থেকে কোডটির জন্য অ্যাপ্লাই করা হয়েছে। এবার তা অন্যত্রও তৈরি হয়ে থাকতে পারে। তাই ৬৯০ থেকে ৬৯৯ এর মধ্যে বারকোডের প্রিফিক্স থাকা মানেই কিন্তু চিনা জিনিস নয়!


তাই উপসংহারে বলাই যায়, #boycottchinaproducts এ করা এই দাবি বিভ্রান্তকর।