নয়াদিল্লি: অকস্মাৎ গুলির শব্দে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছিলেন টিমবাসের সকলে। তারপরই নিরাপত্তারক্ষীদের নির্দেশ মতো প্রাণ বাঁচাতে সকলে মিলে শুয়ে পড়েছিলেন বাসের মেঝেতে। কতক্ষণ যে সেই অবস্থায় কাটিয়েছেন আতঙ্কের প্রহর, ঠিক মনে করতে পারছেন না শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরন। নিউজিল্যান্ড সফররত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ভারতীয় সাপোর্ট স্টাফ। পারফরম্যান্স অ্যানালিস্ট হিসাবে যিনি মুশফিকুর রহিম-তামিম ইকবালদের সঙ্গে ক্রাইস্টচার্চে ছিলেন। জঙ্গি হামলার পর সেখান থেকেই সংবাদসংস্থাকে শোনালেন তাঁর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা।


'প্রথমে কোনও প্রতিক্রিয়াই দেখাতে পারিনি। আতঙ্ক এতটাই গ্রাস করেছিল যে, চিন্তাশক্তি লোপ পেয়েছিল। বাসের সকলেরই অবস্থা একইরকম ছিল,' বলেছেন চন্দ্রশেখরন। যোগ করেছেন, 'শুক্রবার নমাজ পড়ে তারপর অনুশীলনে নামার পরিকল্পনা ছিল ক্রিকেটারদের। আমরা তখন মসজিদ থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরে। আচমকাই শুনতে পেয়েছিলাম গুলির শব্দ। প্রথমে আমি বা ক্রিকেটারেরা কেউই বুঝতে পারিনি কী হচ্ছে। আচমকা দেখলাম এক মহিলা রাস্তায় লুটিয়ে পড়লেন। আমরা ভেবেছিলাম উনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ক্রিকেটারেরা বাস থেকে নেমে ওই মহিলাকে সাহায্য করতে যাচ্ছিল। তারপরই উপলব্ধি করলাম, আমরা যা ভাবছি, তার চেয়েও বিরাট মাপের কিছু ঘটছে।'

ক্রাইস্টচার্চের জঙ্গি হামলায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন সফরকারী বাংলাদেশের ক্রিকেটারেরা। সফর মাঝপথে বাতিল করে দেশে ফিরছেন ক্রিকেটারেরা। সিরিজ বাতিলের যে সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসি-ও।

ঘটনার কথা জানাতে গিয়ে চন্দ্রশেখরন বলেছেন, 'আমরা দেখলাম মানুষ প্রাণ বাঁচাতে দৌড়চ্ছে। চারিদিকে রক্ত। আমাদের নির্দেশ দেওয়া হল বাসের মেঝেত শুয়ে পড়তে। জানি না কতক্ষণ ওই অবস্থায় বাসের মেঝেত শুয়ে ছিলাম। পরে বুঝলাম চারপাশ নিস্তব্ধ, শান্ত হয়েছে। তারপর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করলাম।'

এক সময় আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন চন্দ্রশেখরন। ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সঙ্গে রয়েছেন। প্রাণরক্ষার পর বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে চন্দ্রশেখরন জানিয়েছেন, দ্রুত ভারতে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন।