বিজেন্দ্র সিংহ, নয়াদিল্লি: কয়লাকাণ্ডে দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট দফতর থেকে বেরোলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে বিজেপি-কে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। 


অভিষেক বলেন, ‘প্রথম থেকেই বলছি ১০ পয়সার দুর্নীতিও ধরা পড়লে তথ্য সামনে আনুন। ইডি-সিবিআই লাগানোর দরকার নেই, প্রমাণ করতে পারলে ফাঁসির কাঠে ঝুলব। যাঁদের টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, তাঁদের দেখতে পাচ্ছেন না কেন? রাজনৈতিক কারণেই কি তাঁদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে? অন্য দলে যোগ দেওয়ার জন্যই কি তাঁদের দেখতে পাচ্ছে না ইডি-সিবিআই? আমার বিরুদ্ধে কোনও তথ্য-প্রমাণ থাকলে প্রকাশ্যে আনুন। যদি মনে করেন, ভয় দেখিয়ে তৃণমূলকে জব্দ করবেন, তা হবে না। আপনি যাই করুন না কেন, সামনের ভোটে তৃণমূল জিতবেই। জীবন দিয়ে দেব, কিন্তু মাথা নোয়াব না। কংগ্রেসের মতো ঘরে বসে থাকব না। কাপুরুষরা আমাদের হারাতে পারেনি বলে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে।’


অভিষেক আরও বলেন, ‘২০২৪-এ বিজেপিকে হারাবই। বাংলায় ২০০ আসন পাব বলেছিলেন মোদি। কিন্তু বাংলায় ৭০ আসন পেয়েই থামতে হয়েছে বিজেপিকে। ইডি-সিবিআই-আয়কর, যা কিছু আছে, ব্যবহার করতে পারেন। আমরা যে যে রাজ্যে যাব, সেখানেই বিজেপিকে হারাব। আমাদের সঙ্গে ২৫ জন বিধায়ক যোগাযোগ রাখছেন, কিন্তু নিচ্ছি না। তৃণমূলে আসার পর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে লড়লেও জিতবে। বিজেপি তাদের আটকাতে পারবে না।’


২৮ অগাস্ট কয়লাকাণ্ডের তদন্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস পাঠায় ইডি। তাঁকে ৬ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে, দিল্লিতে ইডি দফতরে হাজির হতে বলা হয়েছিল। এদিন সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ দিল্লির আকবর রোডে জামনগর হাউসে ইডি-র দফতরে পৌঁছন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। 


কয়লাকাণ্ডে সিবিআই-এর পাশাপাশি আর্থিক তছরুপের দিকটা খতিয়ে দেখতে তদন্তে নেমেছে ইডি। কয়লাকাণ্ডে নাম জড়িয়েছে যুব তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বিনয় মিশ্র ও অনুপ মাঝি ওরফে লালার। ইডি সূত্রে দাবি, কয়লাকাণ্ডে মাফিয়াদের থেকে টাকা একাধিক হাত ঘুরে বিনয় মিশ্রের কাছে পৌঁছত।


এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রশ্নমালা তৈরি করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের দাবি, এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বিনয় মিশ্রের সঙ্গে তাঁর কি কোনও সম্পর্ক ছিল? কয়লাকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা-কে তিনি চেনেন?


কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে দাবি, কয়লাকাণ্ডে দেশের বিভিন্ন জায়গায় টাকা পাচার হয়েছে। এমনকী, বিদেশেও পাচার হয়েছে টাকা। সে বিষয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এদিন প্রশ্ন করা হয় বলে সূত্রের দাবি।