নয়াদিল্লি: দলের উর্ধ্বে অটলবিহারী বাজপেয়ীর ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি, নতুন জোটসঙ্গীদের যুক্ত করার অনন্য দক্ষতা এবং ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে পরপর জয়ের সুবাদেই প্রথমবার কংগ্রেসকে সরিয়ে প্রভাবশালী শক্তি হয়ে ওঠে বিজেপি। আজ বাজপেয়ীর প্রয়াণে বর্তমানে কেন্দ্রের শাসক দল অন্যতম মহান নেতাকে হারাল।


আরএসএস, জনসংঘ থেকে পরবর্তীকালে বিজেপি-র প্রধান নেতা হয়ে উঠলেও, কোনওদিনই হিন্দুত্ববাদী আদর্শ নিয়ে চলেননি বাজপেয়ী। তিনি গাঁধীবাদী সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন। এর জন্য তাঁকে দলে কোণঠাসাও হয়ে পড়তে হয়েছিল। কারণ, আরএসএস ঠিক করেছিল, বিজেপি-কে হিন্দুত্ববাদী আদর্শ নিয়ে এগোতে হবে। সেই সময় বিজেপি-র প্রধান নেতা হয়ে ওঠেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। আটের দশকের শেষদিক ও ন’য়ের দশকের গোড়ায় বিশ্বহিন্দু পরিষদের মতো কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি রাম জন্মভূমি আন্দোলন শুরু করে। এরই মধ্যে ১৯৯০ সালে অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরির দাবি নিয়ে দেশজুড়ে রথযাত্রা করেন আডবাণী। সেই সময় থেকেই জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি-র উত্থান শুরু হয়। ১৯৮৪ সালে যে দলের সাংসদ সংখ্যা ছিল মাত্র ২, ১৯৮৯ সালে সেটাই বেড়ে হয় ৮৫। ১৯৯১ সালে ১২০টি আসন নিয়ে প্রধান বিরোধী দল হয়ে যায় বিজেপি। এরপরেই আডবাণীর বদলে বাজপেয়ীকে সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য নেতা বলে গণ্য করতে শুরু করে আসএসএস।

১৯৯৫ সালে বাজপেয়ীকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরে আডবাণীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি। পরের বছরের লোকসভা নির্বাচনেই ফল পাওয়া যায়। প্রথমবার সরকার গড়ে বিজেপি। সেই সরকার বেশিদিন স্থায়ী না হলেও, পরে আরও দু’বার প্রধানমন্ত্রী হন বাজপেয়ী। ১৯৯৯ সালে তিনি তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর পাঁচ বছরের মেয়াদ পূরণ করে সরকার। সব দলের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গেই সুসম্পর্ক ছিল এই নেতার। এই বিষয়টিই তাঁকে ব্যতিক্রমী করে তুলেছিল।