নয়াদিল্লি: দিল্লির বুরারিতে এক সঙ্গে এক পরিবারের ১১ জনের মৃত্যু আত্মহত্যা নয়, দুর্ঘটনা ছিল। কোনও বিধি অনুসরণ করতে গিয়ে দুর্ঘটনাবশত প্রাণ হারান তাঁরা। বলছে মৃতদের সাইকোলজিক্যাল অটপ্সি রিপোর্ট।

সাইকোলজিক্যাল অটপ্সি হল, কোনও ব্যক্তির ডাক্তারি রেকর্ড পরীক্ষা করে তাঁর মানসিক অবস্থা বিচার করা। তাঁর বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা, মৃত্যুর আগে তাঁর মানসিক অবস্থা পরীক্ষা করা। বুরারি কাণ্ডের মৃতদের এই পরীক্ষা করতে সিবিআইকে অনুরোধ করে দিল্লি পুলিশ। বুধবার সন্ধেয় রিপোর্টটি তাদের হাতে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, মৃত ১১ জনের কারওরই আত্মহত্যার উদ্দেশ্য ছিল না। তাঁরা কোনও একটা বিধি অনুসরণ করতে গিয়েছিলেন, সে সময় দুর্ঘটনাবশত সকলের গলাতেই ফাঁস লেগে যায়।

এই তদন্তের সময় সিবিআইয়ের সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি বাড়ির রেজিস্টারে প্রাপ্ত নোটগুলি যাচাই করেছে, বন্ধুবান্ধব, পরিচিতদের বিবৃতি রেকর্ড করেছে ও মৃত চুন্দাবত পরিবারের জীবিত সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছে। জানা গিয়েছে, ১১ বছর ধরে ওই পরিবারের সদস্যরা যে ডায়রিগুলি লেখেন, তাতে ঈশ্বরের সন্ধান নিয়ে নানা উপলব্ধি ও মন্তব্য রয়েছে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বুরারি কাণ্ডে অন্যতম মৃত ললিত চুন্দাবত নাকি নিয়মিত কথা বলতেন তাঁর মৃত বাবার সঙ্গে। তারপর বাড়ির লোকদের নির্দেশ দিতেন, কী কী করতে হবে।

ললিতই অন্যদের বলেন. হাত, পা বেঁধে, কাপড়ে মাথা ঢাকা দিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে কোনও বিধি অনুসরণ করতে। তার ফলে ঘটে ওই দুর্ঘটনা। মৃত ১১ জনের মধ্যে ১১ জনকে পাওয়া যায় একটি ঘরের সিলিং থেকে ঝুলন্ত অবস্থায়, পাশের ঘরে মেঝের ওপর মেলে বাড়ির কর্ত্রী, ৭৭ বছরের নারায়ণ দেবীর লাশ। অন্যান্য মৃতরা ছিলেন নারায়ণ দেবীর মেয়ে প্রতিভা, প্রতিভার ২ ছেলে ভবনেশ ও ললিত, ভবনেশের স্ত্রী সবিতা, তাঁদের ৩ সন্তান মানেকা, নীতু ও ধীরেন্দ্র। এছাড়া ললিতের স্ত্রী টিনা ও তাঁদের ১৫ বছরের ছেলে দুষ্যন্ত এবং প্রতিভার মেয়ে প্রিয়ঙ্কা। এ বছরের শেষেই প্রিয়ঙ্কার বিয়ের কথা ছিল।