বেঙ্গালুরু: আগামী ১৫ জুলাই উৎক্ষেপণ হবে ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রাভিযান ‘চন্দ্রযান ২’-এর। বুধবার এমনটাই জানালেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-র চেয়ারম্যান কে শিবন। তিনি জানান, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছাকাছি অবতরণ করবে চন্দ্রযান। এখনও পর্যন্ত এই অঞ্চলে কোনও যান প্রদক্ষিণ করেনি। ফলত, সেই দিক দিয়ে অচেনা পরিবেশেই গবেষণা শুরু করবে ‘চন্দ্রযান ২’। শিবন জানান, আনুমানিক সেপ্টেম্বর ৬ বা ৭ তারিখ চাঁদের মাটি ছোঁবে ‘চন্দ্রযান ২’।
ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, ১৫ জুলাই ভোর রাত ২.৫১ মিনিট নাগাদ শ্রীহরিকোটা থেকে জিএসএলভি মার্ক-থ্রি রকেটে চেপে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দেবে ‘চন্দ্রযান ২’।
টেক-অফের সময় জিএসএলভি-মার্ক থ্রি রকেটের মোট ভর হবে ৩.৮ টন বা ৩,৮০০ কেজি। ‘চন্দ্রযান ২’-এর মধ্যে মোট তিনটি বিভাগ থাকবে। একটি অর্বিটার, ল্যান্ডার (বিক্রম) ও রোভার (প্রজ্ঞান)। শিবন জানান, অর্বিটারে আটটি পে-লোড থাকবে। ল্যান্ডারে তিনটি ও রোভারে দুটি। ইসরো চেয়ারম্যান জানান, চন্দ্রযান-২ উপগ্রহ তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৬০৩ কোটি টাকা। এছাড়া, জিএসএলভি মার্ক-থ্রি রকেটের খরচ আরও ৩৭৫ কোটি।
ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি নিয়ে চাঁদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করবে অর্বিটার। অন্যদিকে, চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে ল্যান্ডার এবং সেখান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চন্দ্রপৃষ্ঠের বিভিন্ন জায়গায় বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালাবে রোভার। মূলত, খনিজ ও মৌলিক তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা চালাবে রোভার।
এর আগে ১০ বছর আগে ‘চন্দ্রযান ১’ অভিযান পাঠিয়েছিল ভারত। সেখানে মোট ১১টি পে-লোড ছিল। তার মধ্যে পাঁচটি ছিল ভারতের। তিনটি ইউরোপ, দুটি মার্কিন এবং একটি ছিল বুলগেরিয়ার। ওই অভিযানে চাঁদের বুকে জলের অস্তিত্বের হদিশ পেয়েছিল ‘চন্দ্রযান ১’। ১.৪ টনের যানটি পিএসএলভি রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে ১০০ কিলোমিটার উপরে প্রদক্ষিণ করেছিল ‘চন্দ্রযান ১’।
এদিকে, ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান জি মাধবন নায়ার বুধবার দাবি করেন, ‘চন্দ্রযান ২’ অভিযান ২০১২ সালের শেষের দিকেই সম্পন্ন হতে পারত। কিন্তু সেই সময়ে তৎকালীন ইউপিএ সরকার ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে ‘মঙ্গলযান’-এর ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ‘চন্দ্রযান ১’ অভিযানের অন্যতম রূপকার মাধবন নায়ার ২০০৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইসরোর শীর্ষপদে আসীন ছিলেন। গতবছরের অক্টোবর মাসে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন।