বেঙ্গালুরু: চাঁদের মাটিতে অক্ষত অবস্থাতেই রয়েছে বিক্রম ল্যান্ডার। হার্ড ল্যান্ডিং করলেও টুকরো টুকরো হয়ে যায়নি ল্যান্ডার। তবে কিছুটা হেলে রয়েছে। বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের প্রচেষ্টা চলছে। এমনই জানিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-র এক আধিকারিক।
চাঁদের মাটিতে যে যন্ত্রের ঘোরাফেরার কথা, সেই রোভার প্রজ্ঞানকে পেটে রেখেই ল্যান্ডার বিক্রমের চাঁদের মাটিতে আলতোভাবে নামার কথা ছিল। কিন্তু গত ৭ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত অবতরণের সময় চাঁদের মাটি ছোঁয়ার মাত্র ২.১ কিলোমিটার উপরে বিক্রমের সঙ্গে ইসরো-র যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায়।
ইসরোর-র চন্দ্রাভিযানের সঙ্গে যুক্ত ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, চাঁদের মাটিতে অটুট রয়েছে বিক্রম। টুকরো টুকরো হয়ে যায়নি। কিছুটা হেলে রয়েছে। তিনি বলেছেন, চাঁদের মাটিতে সজোরে আছড়ে পড়লেও বিক্রম নির্ধারিত অবতরণ স্থলের খুব কাছেই নেমেছে। চন্দ্রযান ২-র অর্বিটারের সঙ্গে থাকা ক্যামেরায় তোলা ছবি থেকে তা জানা গিয়েছে।
ওই আধিকারিক বলেছেন, আমরা ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছি। ইসরো টেলিমেট্রি, ট্র্যাকিং অ্যান্ড কম্যান্ড নেটওয়ার্ক (আইএসটিআরএসি)-তে ইসরো-র বিজ্ঞানীদের দল ওই চেষ্টা চালাচ্ছে।
ল্যান্ডার ও রোভারের মিশনের আয়ুষ্কাল এক চান্দ্রদিন, যা পৃথিবীর ১৪ দিনের সমান।
ইসরো-র চেয়ারম্যান কে শিবন শনিবার জানিয়েছিলেন যে, আগামী ১৪ দিন ধরে ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের চেষ্টা চালানো হবে। এরপর গতকাল ৮ সেপ্টেম্বর অরবিটারের ক্যামেরায় ল্যান্ডারের ছবি ধরা পড়ার পর আরও একবার এ কথার পুণরাবৃত্তি করেছিলেন।
ইসরো-র এক আধিকারিক বলেছেন, যোগাযোগ পুনরায় স্থাপনের সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ, এক্ষেত্রে ল্যান্ডারের কর্মক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। ল্যান্ডারের সমস্ত কিছুই যথাযথ না থাকলে তা খুব কঠিন। নির্ধারিতভাবে সফ্ট ল্যান্ডিং করলে সমস্ত যন্ত্রপাতি কাজ করত এবং এমনটা হলেই যোগাযোগ স্থাপন করা যেতে পারে। এখনও পর্যন্ত সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ।
মহাকাশ গবেষণা সংস্থার অন্য এক আধিকারিক অবশ্য মনে করেন, যোগাযোগ স্থাপনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে খামতির বিষয়গুলিও তুলে ধরেছেন তিনি। এপ্রসঙ্গে তিনি জিওস্টেশনারি অরবিটে একটি যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যাওয়া মহাকাশযানের সঙ্গে যোগাযোগ পুনঃস্থাপনে ইসরো-র অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেছেন, ল্যান্ডারের বিষয়টি অবশ্য অন্য ধরনের।
তিনি বলেছেন, বিক্রমের ক্ষেত্রে সেই ধরনের কর্মক্ষমতা সংক্রান্ত নমনীয়তা নেই। কারণ, ইতিমধ্যেই সেটি রয়েছে চাঁদের মাটিতে এবং নতুন কিছু পরিবর্তন করা যাবে না।
তিনি বলেছেন, এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল অ্যান্টেনাগুলির অবস্থান। এই অ্যান্টেনাগুলির মুখ হয় গ্রাউন্ট স্টেশন বা অরবিটারের দিকে থাকতে হবে। তিনি বলেছেন, এক্ষেত্রে আমাদের অপেক্ষায় থাকতে হবে।
ওই আধিকারিক অবশ্য বলেছেন, ল্যান্ডারের শক্তি উত্পাদন সংক্রান্ত বিষয়টি কোনও ইস্যু নয়। কারণ, এর চারপাশেই সোলার প্যানেল রয়েছে এবং ভেতরে রয়েছে ব্যাটারিও, যা খুব বেশি ব্যবহৃত হয়নি।