নয়াদিল্লি: হার্ড ইমিউনিটি অর্থাত্ জনসংখ্যার বেশিরভাগের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে গেলে, করোনাও অন্যান্য সিজনাল ভাইরাসের মতোই হয়ে যাবে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে। কোনও কোনও ভাইরাসের দাপট বিশেষ ঋতুতে বা ঋতু পরিবর্তনের সময় বাড়ে। করোনাও তেমন বিশেষ ঋতুতে প্রকোপ বাড়াবে। কিন্তু যতদিন না হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত সারা বছর ধরেই করোনা হবে।

সম্প্রতি ফ্রন্টিয়ার্স ইন পাবলিক হেলথ প্রকাশিত জার্নালের রিপোর্ট অনুসারে, হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়ে গেলে করোনার সংক্রমণও কমবে। বরং ঋতু পরিবর্তনের সময়ই বেশি করে করোনা ছড়াবে তখন, যেমনটা অন্যান্য অনেক ভাইরাল অসুখের ক্ষেত্রে ঘটে থাকে। ওই গবেষণা বলছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রকৃতি এমনটাই থাকবে যতদিন না বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অফ বেইরুটের গবেষক হাসান জারাকেত লেখেন, আপাতত হার্ড ইমিউনিটি গড়ে ওঠার অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। সংক্রমণ এড়়াতে ব্যবহার করে যেতে হবে মাস্ক। এড়িয়ে চলতে হবে জমায়েত। সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলতে হবে। তবে স্বস্তির স্তরে পৌঁছানোর আগে করোনার অনেকগুলির ওয়েভ আসবে বলে মত গবেষকের।

আগের রিসার্চের উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, কোভিড-১৯ এর মতো প্রকৃতি যে ভাইরাসগুলির, যেমন সার্স কোভ-২, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে কোনও কোনও ঋতুতেই প্রকোপ বাড়ায়। এই প্রসঙ্গে ওই গবেষণায় ইনফ্লুয়েঞ্জা ও অন্যান্য কিছু ভাইরাসের কথা বলা হয়েছে, যেগুলি শীতের সময় বেশি ছড়ায়, বিশেষত নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে। কিন্তু ক্রান্তীয় অঞ্চলে সারাবছরই অল্প-বিস্তর সক্রিয় থাকে।

বেশ কিছু সিজনাল ভাইরাসের উপর গবেষণা চালিয়ে তারা ভাইরাসের চরিত্র, কী কী বিষয়ের উপর সংক্রমণ নির্ভর করে তা দেথা হয়। তাপমাত্রা, আর্দ্রতার সঙ্গে ওইসব ভাইরাসের সম্পর্কও খতিয়ে দেখা হয়েছে ওই গবেষণায়। শ্বাসনালীতে সংক্রমণ ছড়ায় এমন ভাইরাসের গতিপ্রকৃতি বিচার করে গবেষকদের ধারণা হার্ড ইমিউনিটি গড়ে ওঠা অবধি করোনার সংক্রমণ আটকানো কঠিন। গণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠলেই কোভিড ১৯ ও সিজনাল হয়ে যেতে পারে। যদিও গবেষকরা স্বীকার করে নিয়েছেন, করোনার গতিপ্রকৃতি এখনও অনেকটাই অজানা।