নয়াদিল্লি: ভারতে এখন করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ চলছে। অসংখ্য মানুষ এই অতিমারীর কারণে অপরিসীম দুঃখদুর্দশার মুখে পড়তে হয়েছে। আঘাত হেনেছে অর্থনীতিকে। এই বিপর্যয়কে   নজিরবিহীন অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এই অতিমারী পরবর্তী পর্বে জীবন আর আগের মতো থাকবে না। পরবর্তী কালে ঘটনাক্রম প্রাক-কোভিড বা পরবর্তী কোভিড পর্ব হিসেবেই স্মরণ করা হবে। 
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে আয়োজিত 'ভেসাক গ্লোবাল সেলিব্রেশনস' অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই অতিমারী বিশ্বের সমস্ত দেশেই প্রভাব ফেলেছে। সেইসঙ্গে বলেছেন, এই পর্বে এমন অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে, যেগুলি অতিমারীর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ের কৌশলকে শক্তিশালী করেছে। 
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল টিকা, যা জীবন রক্ষা ও অতিমারীকে পরাস্ত করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।তিনি বলেছেন, কোভিড ১৯ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার এক বছরের মধ্যেই টিকার উদ্ভাবন মানুষের দৃঢ়তা ও জেদ-কতটা প্রবল, তা তুলে ধরেছে। 
টিকা তৈরির জন্য ভারত দেশের বিজ্ঞানীদের জন্য গর্বিত বলে উল্লেখ করে অন্যদের বাঁচাতে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নেওয়ায় স্বাস্থ্য ও অন্য প্রথমসারির কর্মীদের কুর্ণিশ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। 
অতিমারীর ফলে যাঁরা দুর্ভোগের শিকার হয়েছে, নিকট ও প্রিয়জনদের হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তিনি বলেছেন, করোনার ফলে মানবতা বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়েছে এবং গত একশো বছরে এ ধরনের অতিমারীর সম্মুখীন হতে হয়নি। 
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন ও সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, অতিমারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মধ্যেও মানবতার অন্যান্য চ্যালেঞ্জের দিক থেকে নজর সরানো যায় না। 
প্রধানমন্ত্রী মোদি ছাড়াই নেপাল, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী ও আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ কনফেডারেশের সেক্রেটারি জেনারেল এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জোটবদ্ধভাবে সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থাকে পরাস্ত করতে মানব সভ্যতাকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
মোদি বলেছেন যে, শান্তি, সংহতি ও সহাবস্থানের বাণীই তুলে ধরেছিলেন গৌতম বুদ্ধ। কিন্তু এখনও এমন শক্তি রয়েছে যাদের অস্তিত্ব টিকে রয়েছে বিদ্বেষ, হিংসা ও অর্থহীন হিংসার মধ্যে। এ ধরনের শক্তিগুলি উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক নীতিতে বিশ্বাসী নয়। 
জয়বায়ু পরিবর্তনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মোদি বলেছেন, বর্তমান প্রজন্মের বেপরোয়া জীবনযাপন ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। তিনি বলেছেন, পৃথিবীর ক্ষত সারাতে হবে।