নয়াদিল্লি: রাজধানীর বায়ু দূষণ নিয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের। ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়নে (এনসিআর) যাবতীয় নির্মাণকাজ ও বর্জ্য পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করল শীর্ষ আদালত। নিষেধাজ্ঞা ভাঙলে যথাক্রমে ১ লক্ষ ও ৫০০ টাকা আর্থিক জরিমানা দিতে হবে। বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন সর্বোচ্চ আদালতের বেঞ্চ দিল্লি সংলগ্ন এলাকায় লোকজনকে মৃত্যুর দিকে এগতে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারগুলিকেই আইনত দায়ী করা উচিত বলে অভিমত জানিয়েছে। বলেছে, কে দায়ী? রাজ্য সরকারগুলিও দায়ী। তারা শুধু নির্বাচন নিয়েই আগ্রহী। পাশ্বর্বর্তী এলাকার জনসাধারণকে মরতে দিচ্ছে তারা। তাদের কিছু তো করতে হবে। শীর্ষ আদালত আরও বলেছে, প্রতি বছর দিল্লি শ্বাসকষ্টে হাঁফাচ্ছে। আমরা কিছু করতে পারছি না। একটা সভ্য সমাজে এটা চলতে পারে না। সরকারগুলি শুধু দায় ঠেলতেই ব্যস্ত। কেন ফসল পোড়ানো হবে?
দিল্লির দূষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট তাদের নিয়োগ করা পরিবেশ দূষণ (রোধ ও নিয়ন্ত্রণ) কর্তৃপক্ষের পেশ করা রিপোর্টটি নিয়ে বিচার, বিবেচনা করছে, পঞ্জাব ও হরিয়ানায় ফসল পোড়ানোর মতো ইস্যুও খতিয়ে দেখছে। আদালত বন্ধু প্রথম সারির আইনজীবী অপরাজিতা সিংহ সোমবার সর্বোচ্চ আদালতকে জানান, কেন্দ্রের হলফনামা অনুসারে, পঞ্জাবে ফসল পোড়ানো ৭ শতাংশ বেড়েছে, যদিও ১৭ শতাংশ কমেছে হরিয়ানায়।
রাজধানীর বায়ু দূষণ ক্রমশ খারাপ হতে হতে মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে। সোমবার তা ছিল সবচেয়ে খারাপ স্তরে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর (পিএমও) রিভিউ বৈঠক ডেকেছিল। তাদের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ক্যাবিনেট সচিব দিল্লি, পঞ্জাব, হরিয়ানার পরিস্থিতি প্রতিদিন খতিয়ে দেখবে। সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির মুখ্যসচিবদের সারাক্ষণ সব জেলার পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে বলা হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে শীর্ষ আদালত কঠোর অবস্থান নিয়ে বলেছে, বাড়ির ভিতরেও কেউ নিরাপদ নয়। ল্যুটিয়েনের দিল্লির বেডরুমেও বাতাসের গুণমানের সূচক ৫০০-র বেশি। বায়ু শোধন যন্ত্রও কাজ করছে না। এটা অত্যাচার। এই আবহাওয়ায় কি বেঁচে থাকতে পারব আমরা? এভাবে আমরা বেঁচে থাকতে পারব না। এই পরিস্থিতি ( দিল্লির বায়ু দূষণ) জরুরি অবস্থার থেকেও খারাপ। ওই জরুরি অবস্থা এই জরুরি পরিস্থিতির চেয়ে ভাল ছিল। যেসব গ্রাম প্রধান, পুলিশকর্মী ও স্থানীয় প্রশাসন কর্তারা ফসল পোড়ানোয় রাশ টানতে পারবেন না, তাঁদেরও পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত বলেও অভিমত জানিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
বলেছে, মানুষ মরছে। আরও মরবে, অথচ মাথায় বসে থাকা লোকজন শুধু গিমিকেই উত্সাহী। আমরা এবার বিষয়টা তদারকি করব। ফসল জ্বালানো অবিলম্বে বন্ধ হোক। সব রাজ্যেরই এটা বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করে দিল্লি সরকার, কেন্দ্রকেও সর্বোচ্চ আদালত জানাতে বলেছে, দূষণ কমাতে তারা কী করতে চায়।