নয়াদিল্লি: বেশ কিছুদিন ধরেই চোখে অস্বস্তি হচ্ছিল। এক-দু’দিন নয়। অন্তত মাস দেড়েক। আমেরিকার নাগরিক ওই মহিলা অবশেষে সুরাহা পেলেন ভারতের মাটিতে। দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর তাঁর শরীর থেকে বেরোল তিনটি মাছি।
ওই হাসপাতালের সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই মহিলা মায়াসিস (myiasis) রোগে আক্রান্ত ছিলেন। মাছির লার্ভা থেকে শরীরের ভিতরে সংক্রমণ তৈরি হয়ে এই রোগ হয়। ওই মহিলার শরীর থেকে তিনটি জীবন্ত বটফ্লাই প্রজাতির মাছি বের করা হয়েছে। হাসপাতালের শল্যচিকিৎসা বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, ওই মহিলার চোখের উপরের পাতা থেকে একটি, ঘাড়ের পিছন থেকে একটি এবং ডান হাত থেকে একটি জীবন্ত বটফ্লাই (botfly) বের করা হয়েছে। প্রতিটিই ২ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের।
কিন্তু কীভাবে ঘটল এই ঘটনা? ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, আমেরিকার নাগরিক ওই মহিলা যখন হাসপাতালে এসেছিলেন তখন তাঁর চোখ ফোলা ছিল। ব্যথাও হচ্ছিল। তাঁর সঙ্গে কথা বলে ডাক্তাররা জানতে পারেন মাসদুয়েক আগে দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন জঙ্গলে ঘুরতে গিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই ওই সমস্যার সূত্রপাত। এর মধ্যে আমেরিকায় ডাক্তারও দেখান তিনি। কিন্তু সেখানে শরীর থেকে মাছি বের করা যায়নি। সেই সময় ওষুধের মাধ্যমে সাময়িক সুরাহা হয় তাঁর। এরপর ওই মহিলার ট্র্যাভেল হিস্ট্রি (travel history) খতিয়ে দেখে এবং তাঁর ত্বকের নিচে কিছু ঘোরাফেরার করার হদিস পেয়ে রোগের খোঁজ পান দিল্লির ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে গোটা অস্ত্রোপচার হয়েছে। ছেড়েও দেওয়া হয়েছে আমেরিকার নাগরিক ওই মহিলাকে।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, মায়াসিস (myiasis) রোগে মানবদেহের ত্বকের নিচে গর্ত তৈরি করে মাছি। সেখান থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করে প্রাণীটি। মূলত ক্রান্তীয় (tropical) ও উপক্রান্তীয় (sub tropical) এলাকায় থাকা মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকার (africa) একটি বিস্তীর্ণ অংশে এই ধরনের রোগ দেখা যায়। ভারতেও গ্রামীন এলাকায় ছোটদের মধ্যে এমন রোগের খোঁজ মিলেছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, সাধারণত প্রাণঘাতী না হলেও, সময়ে চিকিৎসা না হলে এই রোগে দেহের অভ্যন্তরীণ নান অঙ্গ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বাড়াবাড়ি হলে মস্তিষ্কের আবরণের ক্ষতি হয়ে ঘটতে পারে মৃত্য়ুও।
আরও পড়ুন: চোখ দেখে ধরা যাবে করোনা, আসছে নতুন পরীক্ষা
আরও পড়ুন: যেকোনও বয়সে ছানির সমস্যা দেখা দিতে পারে, কীভাবে বুঝবেন?