নয়াদিল্লি : বাচ্চা কোন পদবী গ্রহণ-ব্যবহার করবে তা ঠিক করে দেওয়ার কোনও অধিকার বাবার নেই। শিশু যদি চায় মায়ের পদবী ব্যবহার করতে, তাহলে তেমনটা সে করতেই পারে। শুধু বাবার পদবীই নয়, মায়ের নামের পদবী ব্যবহার করাও শিশুর অধিকার। এমনই পর্যবেক্ষণ দিল্লি হাইকোর্টের। মহামান্য আদালতের যে পর্যবেক্ষণ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল। এক মামলার প্রেক্ষিতে দিল্লি হাইকোর্টের মহামান্য বিচারপতি রেখা পাল্লি বলেন, 'একজন বাবা তাঁর মেয়েকে নির্দেশ দিতে পারে না যে তাঁকে তাঁরই পদবী ব্যবহার করতে হবে। যদি বাচ্চা মেয়েটি তাঁর মায়ের পদবী ব্যবহার করে খুশি হয়, তাহলে সমস্যা কোথায়?'
যাবতীয় ডকুমেন্টে তার মায়ের বদলে তাঁর নামের পদবী ব্যবহার করা হোক, এই দাবি নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক ব্যক্তি। মামলা করার ভিত্তিতে ওই ব্যক্তির দাবি ছিল, তাঁর যাবতীয় ইনস্যুরেন্স থেকে শুরু করে আর্থিক এখাধিক বিষয়ের ক্ষেত্রে বাচ্চা মেয়ের পদবীর বদল থাকলে সমস্যা হতে পারে, তাই যাতে নামের পদবী বদলের আর্জি গ্রহণ করা হয়। মেয়ে মায়ের পদবী ব্যবহার করে বলে বাচ্চা স্কুলে তাঁকে যাতে বাবা হিসেবে না দেখানো হয়, ইতিমধ্যে সেই আর্জিও জানিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি।
তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ওই ব্যক্তির বর্তমানে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাচ্চার দায়িত্ব ও পদবী নিয়ে চলছিল সংঘাত। যা গড়ায় কোর্টের দরজা পর্যন্ত। যেখানে ওই ব্যক্তি দাবি করেন, তাঁর মেয়ে খুব ছোট, তাই কোন পদবী নিলে তাঁর ভালো হবে, সেটা ঠিক করার মতো জায়গায় সে নেই। যে দাবির ভিত্তিতেই মামলাকারীকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন বিচারপতি রেখা পাল্লি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, বাচ্চা মেয়েটি যদি তার মায়ের পদবী নিয়ে খুশি থাকে, তাহলে সমস্যা কোথায়। যারপরই তিনি জানিয়ে দেন, শুধু বাবার নয়, মায়ের পদবী ব্যবহার করাও শিশুর অধিকার। মামলাটা তিনি খারিজও করে দেন।