কলকাতা: রথের রশিতে টান পড়া মানেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের কাউন্টডাউন শুরু। জগন্নাথ যেদিন মাসির বাড়ি যান সেদিনই কাঠামো পুজোর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সূচনা হয়ে যায় দুর্গা পুজোর। রীতি মেনে এবারও সেই প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে কলকাতার অনেক বনেদি বাড়ি। দাঁ বাড়িতে যেমন রথের দিন কাঠামো পুজো দিয়ে শুরু হল দেবীর আবাহন। কুমোরটুলিতেও সেদিন অনেকে প্রতিমার বায়না দিয়ে গেলেন। বাড়ির প্রতিমা ছাড়াও শহরের অনেক বড় পুজো কমিটি রথের দিন ‘পাকা কথা’ সেরে রেখেছে। একই পথে হেঁটে ঐতিহ্য মেনে প্রস্তুতি শুরু করে দিল একডালিয়া এভারগ্রিনও।
এবারও উল্টো রথে হবে প্রতিমার বায়না। বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও একডালিয়ার প্রতিমা গড়বেন শিল্পী সনাতন রুদ্র পাল। কথা হয়ে গিয়েছে, উল্টো রথের দিন সিলমোহর পড়বে খাতায় কলমে। দক্ষিণ কলকাতার এই পুজোর নেপথ্য নায়ক মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ছাত্রবেলা থেকে এই পুজোর সঙ্গে তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ধারে ও ভারে মন্ত্রীমশাইয়ের পুজো বরাবরই কলকাতার সেরার সেরা। করোনার কারণে এবার জৌলুস কমবে, তবে পুজো হবে ধুমধাম করেই।
একডালিয়া এভারগ্রিনের অন্যতম কর্মকর্তা স্বপন মহাপাত্র এবিপি আনন্দকে জানিয়েছেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই মণ্ডপ ও আলোকসজ্জার বিষয়টি এগিয়ে রেখেছেন। তাঁর কথায়, “আমরা থিম করি না। প্যান্ডেল হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের আশীর্বাদ ডেকরেটর্সই এবার একডালিয়ার মণ্ডপ করবে। তাদের বায়না দেওয়া হয়ে গিয়েছে।” আলোর রোশনাই এবার কম হবে। অটোমেটিক আলোর যে ‘ম্যাজিক’, তা হয়ত এবার দর্শক দেখতে পাবেন না ঠিকই, তবে প্রতিবারের মতো এবারও খড়দার বাপি ইলেকট্রনিক্সই সাজিয়ে তুলবে একডালিয়াকে।
স্বপন মহাপাত্র আরও বলেন, “সামাজিক দূরত্ব বিধির কথা মাথায় রেখে এবার কোনও জলসা হবে না। জনসমাগম কমাতে হবে না গেট টুগেদারও।” তবে পুজোর রীতিনীতিতে কোনওরকম কার্পণ্য হবে না। একডালিয়ার পুজোর ভোগ নিয়ে বাঙালিদের বিশেষ করে দক্ষিণ কলকাতার মানুষের মধ্যে যে উৎসাহ থাকে তাতে কোনও ভাটা পড়বে না। ‘মায়ের ভোগ হবে ভোগের মতোই’, জানিয়েছেন স্বপনবাবু।
২০১৯: একডালিয়া এভারগ্রিনের পুজো উদ্বোধনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
এবার মহালয়া সেপ্টেম্বরে আর পুজো অক্টোবরে। তার ওপর চলছে করোনা মহামারীর প্রকোপ। সেক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবছর একডালিয়ার পুজো উদ্বোধন করবেন কিনা তা নিয়ে একটা প্রশ্ন থাকছে। প্রথমা বা দ্বিতীয়াতে মণ্ডপ উদ্বোধন করার যে রীতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরু করেছেন, এবার তাতে প্রতিবন্ধক হতে পারে কোভিড-১৯। যদিও অনেকে আবার প্রযুক্তির সহায়তায় সেই বাধা দূরের কথাও ভাবছেন।