মুম্বই: ভিক্ষা করে মুম্বইয়ের চেম্বুরে দু’টি ও ওরলিতে দু’টি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন ৭০ বছরের এক মহিলা। তারপরেও তিনি রোজ ঘাটকোপার অঞ্চলে একটি জৈন মন্দিরের বাইরে ভিক্ষা করতেন। তাঁর টাকার অভাব ছিল না। সেই টাকা নিয়ে দত্তক নেওয়া ছেলের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদের জেরে খুন হলেন ওই বৃদ্ধা।


পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার নাম সঞ্জনা পাতিল। সোমবার সন্ধেবেলা তাঁকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন দাবি করা হয়, তিনি পা হড়কে শৌচাগারে পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছেন। কিন্তু তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ১৪টি আঘাত এবং ঘাড়ে আঘাতের চিহ্ন দেখে চিকিৎসকদের সন্দেহ হয়। তাঁরা পুলিশে খবর দেন। তদন্তে নেমে পুলিশকর্মীরা জানতে পারেন, তাঁকে খুন করেছেন দত্তক নেওয়া ছেলের স্ত্রী দীনেশ পাতিল।

তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন, সঞ্জনার স্বামী কয়েক বছর আগে মারা যান। তাঁদের কোনও সন্তান না থাকায় স্বামীর বন্ধুর ছেলে দীনেশকে দত্তক নেন ওই বৃদ্ধা। তিনি দত্তক পুত্র ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন এবং বাকি তিনটি ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়েছিলেন।

এক পুলিশকর্মী জানিয়েছেন, ‘মৃতার পুত্রবধূ তদন্তে সহযোগিতা করছিলেন না। জেরায় তিনি কিছু বলতে রাজি হচ্ছিলেন না। তাঁর ছোট মেয়ে বলে, সেদিন সকালে তার মায়ের সঙ্গে ঠাকুমার ঝগড়া হয়েছিল। এরপরেই তদন্ত অন্যদিকে মোড় নেয়। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ওই বৃদ্ধা ভিক্ষা করে এসে ফ্ল্যাটের কোনও একটি জায়গায় টাকা রেখে দিতেন। সেই টাকা নিয়েই বচসা শুরু হয়। সোমবার বিকেল তিনটে নাগাদ ঝগড়ার সময় একটি ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে শাশুড়িকে কয়েকবার আঘাত করেন অঞ্জনা। এরপর তিনি দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেই দড়ি ছিঁড়ে যায়। এরপর মোবাইলের চার্জার গলায় পেঁচিয়ে ধরেন। পরে অঞ্জনা স্বীকার করেন, সম্পত্তি নিয়ে শাশুড়ির সঙ্গে তাঁর প্রায়ই ঝগড়া হত। তিনি চারটি ফ্ল্যাটই তাঁর নামে লিখে দেওয়ার জন্য শাশুড়ির উপর চাপ দিতেন। সেটা নিয়ে বিবাদের জেরেই এই খুন। মৃতার সোনার গয়নাও অঞ্জনার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে।’