বিষাদগ্রস্থ হয়ে পড়েছিলেন লকডাউন বন্দিদশায়, সৌমিত্রবাবু লিখেছিলেন, 'লেখা, আঁকা এসব কাজের বোধ করি শেষ হয়ে এল'

সৌমিত্র কন্যা পৌলমী বলছিলেন, 'লকডাউনের বন্দিদশায় বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন বাবা। মানুষের সঙ্গে মেলামেশা, কথা বলা, সবার মাঝে থাকতেই সবসময় পছন্দ করতো বাপি। একাকিত্ব কাটাতে তাই সেই সময়ই এই লেখা, আঁকার সৃষ্টি।'

Continues below advertisement
কলকাতা: নেই শুধু নশ্বর দেহটুকু, অপু অপরাজিতই। খোঁজ মিলল অচেনা এক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের। সৌমিত্রবাবুর লেখা ও আঁকা সম্বলিত আস্ত একটা ডায়ারির খোঁজ পাওয়া গেল তাঁর গলফগ্রিনের বাড়িতে। তাঁর স্টাডি রুমের টেবিলের উপরই রাখা রয়েছে যে অমূল্য সম্পদ। লকডাউন পর্বে হাসপাতালে যাওয়ার আগে পর্যন্ত সৌমিত্রবাবু তাঁর যাবতীয় ভাবনা লেখা ও ছবি আকারে নথিবদ্ধ করে রেখে গিয়েছেন ডায়ারিটিতে। সৌমিত্র কন্যা পৌলমী বলছিলেন, 'লকডাউনের বন্দিদশায় বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন বাবা। মানুষের সঙ্গে মেলামেশা, কথা বলা, সবার মাঝে থাকতেই সবসময় পছন্দ করতো বাপি। একাকিত্ব কাটাতে তাই সেই সময়ই এই লেখা, আঁকার সৃষ্টি।' লকডাউনের সময় রোজ বিকেলে বাড়ির মূল ফটকের মধ্যে সামনের খোলা জায়গায় হাঁটাচলা করতেন সৌমিত্রবাবু। আর দিনের বেশিরভাগ সময়টা কাটাতেন স্টাডিরুমেই। যেখানে শোভা করে রয়েছে শিশির কুমার ভাদুড়ির ছবি। পড়াশোনা, লেখালিখি নিয়েই সারাটা দিন কার্যত কাটিয়ে দিতেন ফেলুদা। চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে সৌমিত্র বাবুর সেই ডায়ারিটিতে লেখা শুরু করেন। তাঁর নিজের হাতের একাধিক লেখা, আঁকায় সম্বলিত ডায়ারিটি। লেখালিখি বরাবরই করলেও আঁকার বিষয়টি তিনি শুরু করেছিলেন একেবারে শেষজীবনে। ডায়ারিতে সৌমিত্রবাবু লিখেছেন, 'লেখা, আঁকা এসব কাজের বোধ করি শেষ হয়ে এল।' কবিতার গুঞ্জন আর শুনতে পান না বলেও আফশোস করেছেন। কোথাও কি সংসার ত্যাগের অশনি সংকেত আগেভাগেই পেয়েছিলেন তিনি! সৌমিত্রবাবু সশরীরে না থাকলেও তাঁর জীবনদর্শন বাঙালির জীবনের শাখা-প্রশাখার মধ্যে থেকে যাবে চিরকাল।
Continues below advertisement
Sponsored Links by Taboola