নয়াদিল্লি: কৃষকদের আন্দোলন নিয়ে এখনও উত্তপ্ত সিঙ্ঘু, গাজিপুর সহ উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা সীমান্ত। আজ আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে যান বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, এনসিপি নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে, ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝি ও শিরোমণি অকালি দলের নেত্রী হরসিমরত কউর। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে কৃষকদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি।


শিরোমণি অকালি দলের সাংসদ হরসিমরত কউরের অভিযোগ, তাঁরা গাজিপুর সীমান্তে গিয়ে আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিরোধী দলগুলির নেতা-নেত্রীদের ব্যারিকেড টপকে কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। ১০টি বিরোধী দলের ১৫ জন সাংসদ গাজিপুর সীমানায় যান। কিন্তু আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি।

এদিকে, কৃষকরা শনিবার তিন ঘণ্টার জন্য সব জাতীয় ও রাজ্য সড়ক অবরোধ করার ডাক দিয়েছেন। তার আগে আজও কৃষক আন্দোলনের জন্য সিঙ্ঘু, গাজিপুর সীমান্তে গাড়ি চলাচল বন্ধ।

দিল্লির ট্র্যাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে ট্যুইট করে জানানো হয়েছে, ‘সিঙ্ঘু, পিয়াউ মানিয়ারি, সাবোলি, ঔচণ্ডী সীমানা বন্ধ। লামপুর, সফিয়াবাদ, সিঙ্ঘু স্কুল ও পাল্লা টোল ট্যাক্স সীমানা খোলা। সবাই বিকল্প রাস্তা দিয়ে যান। ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কে যানজট হয়েছে এবং গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আউটার রিং রোড, জিটিকে রোড ও ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এড়িয়ে চলাই ভাল।’

দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলে ৩১ কোম্পানি সিআরপিএফ আরও ২ সপ্তাহের জন্য মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিঙ্ঘু, গাজিপুর ও টিকরি সীমানায় নিরাপত্তা এখনও জোরদার রাখা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে সিমেন্টের ব্যারিকেডের কাছে পেরেক পুঁতে রাখা হয়েছে। এছাড়া তারের জালের বেষ্টনীও রাখা হয়েছে। আন্দোলনকারীরা যাতে এগোতে না পারেব, তার জন্যই এই ব্যবস্থা করেছে পুলিশ।

আন্দোলনকারীরা অবশ্য পিছু হটতে নারাজ। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের মুখপাত্র রাকেশ টিকাইত বলেছেন, ‘৩ কৃষি আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন থামবে না। অক্টোবরের আগে আন্দোলন থামছে না। আমাদের স্লোগান হল, আইন প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আমরা বাড়ি ফিরব না। এখনই আন্দোলন থামছে না।’
দিল্লির সীমানায়  নিরাপত্তা জোরদার করা এবং ব্যারিকেড ও বেষ্টনী দেওয়া প্রসঙ্গে টিকাইত বলেছেন, ‘কৃষকদের আটকানোর জন্য সরকার যে কৌশল অবলম্বন করেছে, তার উল্টো ফল হবে। কারণ, এর ফলে বিভিন্ন জায়গায় কৃষিপণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে সমস্যা হবে। সাধারণ মানুষ সমস্যায় হবে। সবার কাছে আমার আবেদন, অক্টোবর বা নভেম্বর পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি থাকুন। সরকার যত খুশি বেষ্টনী তৈরি করুক।’

দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে আজ অবশ্য জানানো হয়েছে, ‘বিভিন্ন ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যাতে দেখা যাচ্ছে, গাজিপুর থেকে পেরেক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শুধু পেরেকের অবস্থান বদল হয়েছে। এছাড়া আর কিছু নয়। সীমানায় বেষ্টনী ও ব্যারিকেড আগের মতোই আছে।’