মুম্বই: তোলাবাজি ও অর্থপাচারের অভিযোগে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখকে গ্রেফতার করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। রাত একটা নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। আজ তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়। এরপর ১২ ঘণ্টার ম্যারাথন জেরা করা হয় অনিল দেশমুখকে। ৬ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁকে ইডি হেফাজতেই থাকতে হবে বলে খবর।
সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, অনিল দেশমুখের আইনজীবী ইন্দরপাল সিংহ জানিয়েছেন, ‘আমরা তদন্তেসহযোগিতা করছি। সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার মামলা দায়ের করেছে ইডি। আজ যখন অনিল দেশমুখকে আদালতে পেশ করা হবে, তখন আমরা তাঁর হেফাজতের বিরোধিতা করব।’
ইডি সূত্রে খবর, গতকাল সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে দক্ষিণ মুম্বইয়ের বালার্ড এস্টেট অঞ্চলে ইডি দফতরে আইনজীবীকে নিয়ে হাজির হন অনিল দেশমুখ। এরপর থেকেই তাঁকে জেরা শুরু করেন তদন্তকারীরা। তোলাবাজি ও অর্থপাচারের অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে থাকেন তদন্তকারীরা। এই মামলার বিষয়ে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করেন ইডি আধিকারিকরা। কিন্তু তিনি সহযোগিতা করেননি বলে দাবি তদন্তকারীদের। সেই কারণেই গভীর রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা অনিল দেশমুখের
কয়েক মাস আগে অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনেন মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার পরম বীর সিংহ। তাঁর দাবি, একাধিক অনৈতিক কাজে যুক্ত মহারাষ্ট্রের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি গ্রেফতার হওয়া মুম্বই পুলিশের সহকারী কমিশনার সচিন ওয়াজকে প্রতি মাসে ১০০ কোটি টাকা জোগাড় করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। চিঠিতে মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার লিখেছেন, ‘সচিন ওয়াজ মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্র্যাঞ্চের ক্রাইম ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান ছিলেন। গত কয়েক মাসে তাঁকে নিজের বাসভবনে ডেকে পাঠান মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। তিনি সচিনকে বলেন, টাকা জোগাড়ের কাজে তাঁকে সাহায্য করতে হবে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় এবং তার পরেও সচিনকে নিজের বাসভবনে ডেকে পাঠান মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই সময় তাঁর ব্যক্তিগত সচিব সহ কয়েকজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সচিন ওয়াজকে বলেন, প্রতি মাসে ১০০ কোটি টাকা জোগাড় করে দিতে হবে।’
পরম বীর সিংহের এই চিঠি প্রকাশ্যে আসার পরেই মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার দাবি ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। শেষপর্যন্ত এপ্রিলে পদত্যাগ করেন অনিল দেশমুখ। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়।