হায়দরাবাদ: ৪ থেকে একলাফে ৪৮টি আসন! গ্রেটার হায়দরাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (জিএইচএমসি) নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও, দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসে নিজেদের শক্তির পরিচয় দিল বিজেপি। তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি (টিআরএস) ও আসাদউদ্দিন ওয়েসির মিম-কে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল বিজেপি, যা আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে গেরুয়া শিবিরের কাছে বাড়তি উৎসাহের। এই ফলের পর দলের নেতা-কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন অমিত শাহ, জেপি নাড্ডারা।


এই ফলে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত বিজেপি। সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদবের ট্যুইট, ‘সুশাসনের মডেল হিসেবে বিজেপিকে বেছে নেওয়ার জন্য হায়দরাবাদের মানুষকে ধন্যবাদ। এটা টিআরএস-এর নৈতিক পরাজয়। দুর্নীতি ও পরিবারতন্ত্রের রাজনীতির বিরুদ্ধে আমাদের নৈতিক জয়। বিজেপি-র শক্তি ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে।’

জিএইচএমসি-র আসন সংখ্যা ১৫০। ম্যাজিক ফিগার ৭৬। গতবার টিআরএস যেখানে ৯৯টি আসন পেয়েছিল, সেখানে এবার তাদের আসন একধাক্কায় প্রায় অর্ধেক হয়ে গেল। ৫৫টি আসন পেয়ে তারা ম্যাজিক ফিগার থেকে অনেকটাই দূরে। সবাইকে চমকে দিয়ে দু’নম্বরে উঠে এসেছে বিজেপি। গতবার তারা পেয়েছিল মাত্র ৪টি আসন। এবার তাদের প্রাপ্ত আসন ৪৮। একা লড়ে আগেরবারের মতোই ফল করেছে মিম। গতবার তারা ৪৪টি আসন পেয়েছিল, এবারও তারা একই সংখ্যক আসন পেয়েছে। কংগ্রেস গতবারও দুটি আসন পেয়েছিল, এবারও দু’টি আসন পেয়েছে।

বিহার জয়ের পর নিজামের শহর হায়দরাবাদের নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপায় বিজেপি। নরেন্দ্র মোদি বাদে বিজেপি-র সব তারকা প্রচারক, অর্থাৎ‍ অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা এবং যোগী আদিত্যনাথ পুরসভার এই ভোটে প্রচার করেছিলেন। গতকাল সকালে পোস্টাল ব্যালটের গণণার সময় বিজেপি দারুণভাবে এগিয়ে যায়। যা দেখে উচ্ছ্বসিত বিজেপি নেতারা ক্ষমতা দখলের আশায় একের পর এক ট্যুইট করতে শুরু করেন। কিন্তু, সাধারণ ব্যালট গণণা শুরু হতেই কিছুটা পিছিয়ে পড়তে শুরু করে বিজেপি। উপরে উঠতে শুরু করে টিআরএস এবং মিম। ভোটের ফল বলছে, টিআরএসের যতটা ক্ষতি হয়েছে, ঠিক ততটাই লাভ হয়েছে বিজেপির।

কেন্দ্রের শাসক দলের নেতারা বলছেন, এই ফলে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, তেলঙ্গানায় বিকল্প শক্তি হিসেবে উঠে আসছে বিজেপি। তাঁরা আশাবাদী, কর্ণাটকের পর দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যেই তাঁদের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তেলঙ্গানার বিজেপি সভাপতি বান্দি সঞ্জয় কুমার বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুশাসন ও উন্নয়নের প্রতি হায়দরাবাদের মানুষ ভরসা রেখেছেন। ১০ নভেম্বর দুব্বাকার উপনির্বাচনে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের আত্মীয় টি হরিশ রাওকে হারিয়ে দিয়েছে বিজেপি। এরপর জিএইচএমসি-র ভোটের ফল মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে কে টি রামা রাওয়ের কাছে আরও বড় পরাজয়। টিআরএস সরকার তেলঙ্গানার মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। কেসিআর ও টিআরএস জনসমর্থন হারিয়েছে। বিজেপি-র এই রাজ্যে ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা উজ্জ্বল।’

১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সারা দেশে বিজেপি-র আসন সংখ্যা ছিল মাত্র ২। কিন্তু পাঁচ বছর পরে ১৯৮৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে একলাফে বিজেপি-র সাংসদ সংখ্যা বেড়ে হয় ৮৫। হায়দরাবাদে আসন সংখ্যা একলাফে অনেকটা বেড়ে যাওয়ার পর তাই তেলঙ্গানায় সরকার গঠনের বিষয়ে আশাবাদী গেরুয়া শিবির।