কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে ভয়ের পরিবেশ রয়েছে। পুলিশ বিরোধীদের নানাভাবে হেনস্থা করছে। এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক অভিযোগ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের।


পাশাপাশি একাধিক বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করেছেন রাজ্যপাল। তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, ‘বিচারপতি নিয়োগে রাষ্ট্রপতির ওয়ার‍্যান্ট আটকে রেখেছিল সরকার। স্বাধীনতার সত্তর বছরেও এমন ঘটনা দেখা যায়নি।’

আচার্যকে এড়িয়ে যেভাবে সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করেছে রাজ্য, কড়া ভাষায় তার নিন্দা করেছেন ধনকড়। বলেছেন, তছনছ হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থা। শিক্ষামন্ত্রকের কর্মপদ্ধতি গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষায় ‘পক্ষাঘাত’ হয়েছে বলেও চাঞ্চল্যকর মন্তব্য রাজ্যপালের।

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসাবে নিযুক্ত হওয়ার পরই রাজ্য সরকারের সঙ্গে একের পর এক বিষয়ে মতবিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন ধনকড়। যার সূত্রপাত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কাণ্ড দিয়ে। একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে ছাত্রবিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয়। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপালকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। ধনকড় নিজে গিয়ে বাবুলকে উদ্ধার করে আনেন। তারপর থেকেই বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতিতে সরগরম হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা-মন্ত্রী তোপ দাগেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। অভিযোগ করা হয়, বিরোধী দলনেতার মতো কাজ করছেন নবনিযুক্ত রাজ্যপাল। রাজ্য প্রশাসনকে না জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য রাজ্যপালের সমালোচনাও করা হয়েছিল।

সোমবার এবিপি আনন্দকে ধনকড় বলেছেন, ‘রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে মুখ্যসচিব সবার সঙ্গে কথা বলেই যাদবপুরে যাই। কিন্তু সেদিন কেন ছিলেন না পুলিশ কমিশনার? সিপির নিজের থাকা উচিত ছিল।’

রেড রোডে রাজ্য সরকার অনুষ্ঠিত দুর্গাপুজোর কার্নিভালে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন ধনকড়। যদিও গোটা অনুষ্ঠানে তিনি ব্রাত্য ছিলেন বলে তোপ দেগেছিলেন স্বয়ং রাজ্যপাল। রাজ্য সরকারের তাঁর প্রতি উদাসীনতায় তিনি যারপরনাই অপমানিত বলেও ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন ধনকড়। সোমবার সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘একটাও লাইভ অনুষ্ঠান দেখতে পাইনি। অপমান করা হয়েছে আমার পদকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী শাহেনশা কি তরহ বৈঠি হ্যায়। অউর রাজ্যপালকো কোনে মে ডাল দিয়া।’

তাঁকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েও একাধিক শাসক নেতা পরে সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করে অপমান করেছেন বলেও তোপ দেগেছেন রাজ্যপাল। ধনকড় বলেছেন, ‘অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েও প্রত্যাহার করেছিলেন একাধিক শাসক নেতা।’