মারাঠওয়াড়া:  সপ্তদশ লোকসভা ভোটে দলের ভরাডুবির পর এই প্রথম দুই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের মুখোমুখি হচ্ছে কংগ্রেস। হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্র, এই দুই রাজ্যেই সপ্তাহখানেক পরেই ভোট। এই দুই রাজ্যই এখনও পর্যন্ত বিজেপির দখলে। ফের একবার ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে ইতিমধ্যেই ঘুঁটি সাজিয়ে ফেলেছেন শাহ-নাড্ডারা। রবিবার মাঠে নেমে পড়েছেন নরেন্দ্র মোদিও। ইতিমধ্যেই জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ ফিরিয়ে নিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন কংগ্রেসকে। দেরিতে হলেও এবার সম্মুখ সমরে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গাঁধী।


মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস যে সময় কেন্দ্র-রাজ্য নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে জেরবার, ঠিক তখনই একেবারে ফ্রন্টলাইনে চলে এলেন সনিয়া পুত্র। মহারাষ্ট্রের মারাঠওয়াড়ায় প্রথম নির্বাচনী জনসভা। সেখান থেকে সরাসরি তোপ দাগলেন রাহুল গাঁধী। নিশানা করলেন কেন্দ্র সরকারকে। আর্থিক মন্দা, বেকারত্ব, দারিদ্র একাধিক বিষয়ে মোদি সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন কংগ্রেস হাইকমান্ড। সরকার মুন মিশন নিয়ে কথা বলছে, জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে অথচ বেকারদের চাকরি নিয়ে একটা কথাও বলছে না। রকেট কি লক্ষ লক্ষ পেটের জ্বালা মেটাতে পারবে, প্রশ্ন তুলেছেন কেরলের ওয়েইনাড়ের সাংসদ। রাহুলের কথায়, “দেশের যেকোনও প্রান্তে আপনি যান, শুনতে পাবেন সবাই বেকারত্ব নিয়ে কথা বলছে। কৃষি সঙ্কট, আর্থিক মন্দা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কোথায় গেল আচ্ছে দিন? এখনও আসেনি। বিমুদ্রাকরণের পর এখনও কত কালো টাকা উদ্ধার হল, কেউ জানে না। দেশবাসীকে আসল সমস্যা থেকে বিমুখ করে রাখার জন্যই জম্মু-কাশ্মীর ও চন্দ্রাভিযান নিয়ে কথা বলা হচ্ছে।''


এখানেই শেষ নয়। নরেন্দ্র মোদি ও শি জিনপিং বৈঠক নিয়েও প্রধানমন্ত্রীকে একহাত নিয়েছেন রাহুল। “যখন তাঁরা চা বিস্কুট খাচ্ছিলেন, প্রধানমন্ত্রী কি একবারও ডোকলামে চিনা আগ্রাসন নিয়ে প্রশ্ন করেছেন”, তোপ সনিয়া পুত্রের। দেশে বেকারত্বের কারণ হিসেবে ‘মেড ইন চায়না’ পলিসিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন রাহুল গাঁধী।


নোটবন্দি এবং জিএসটির কারণে মহারাষ্ট্রের অনেক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গাড়ি বিক্রিতে মন্দা, একের পর এক ছোট ও মাঝারি কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে নীরব মোদি, মেহুল চোকসিরা কোটি কোটি টাকা লুঠ করে পালিয়ে যাচ্ছেন। এর প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে পড়েছে এবং সেকারণেই মন্দা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আগামী ছয়, সাত মাসে আরও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি আসতে চলেছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাহুল।


শিল্পপতিদের কর ছাড় নিয়েও এদিন কেন্দ্রকে আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। সরকার ‘দিওয়ালি গিফট’ হিসেবে শিল্পপতিদের ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা কর ছাড় দিয়েছে অথচ ৩৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে গ্রামের গরিবদের চাকরির সংস্থান করতে পারছে না, মারাঠওয়াড়ার সভায় বলেন রাহুল গাঁধী।


এদিনের জনসভা থেকে রাহুল আরও বলেন, “সরকার জ্বলন্ত সমস্যায় নজর না দিয়ে, চাঁদ, জম্মু-কাশ্মীর, পাকিস্তান, চিন, জাপান, কোরিয়ার কথা বলে বেরাচ্ছে। মাথায় রাখবেন, রকেট কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষের পেটের জ্বালা মেটাবে না।”