শ্রীনগর: কয়েক মাস আগে রিয়াজ নাইকু খতম হওয়ার পর তার স্থলাভিষিক্ত হওয়া হিজবুল মুজাহিদিনের সর্বেসর্বা ডঃ সৈফুল্লাহও  রবিবার শ্রীনগরের রঙ্গরেথ এলাকায় নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারাল । দুদিন আগে শ্রীনগরে সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে  তিন বিজেপি কর্মীর হত্যায় সে জড়িত ছিল বলে দাবি  করেছেন জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল দিলবাগ সিংহ। ডঃ সৈফুল্লাহকে হিজবুলের অপারেশন সংক্রান্ত চিফ কম্যান্ডার করা হয়েছিল।  তার পাশাপাশি রাওয়ালপোরার এনকাউন্টারে এক সন্দেহভাজন জঙ্গিও ধরা পড়েছে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি একে রাইফেল ও একটি পিস্তল।

জনৈক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, শ্রীনগরের পুরানো এয়ারফিল্ডের কাছে রঙ্গরেথ এলাকায় সন্ত্রাসবাদীদের গা ঢাকা দিয়ে থাকার খবর পেয়ে নিরাপত্তাবাহিনী এলাকাটি ঘিরে ফেলে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। জঙ্গিরা তাদের নিশানা করে গুলি চালায়। জবাব দেয় বাহিনীও। এনকাউন্টার চলে। সংঘর্ষস্থল থেকে  আপত্তিকর নথিপত্র, অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলে জানান পুলিশকর্তাটি।

কাশ্মীর পুলিশের ইনস্পেক্টর জেনারেল বিজয় কুমার জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে পাকা খবর ছিল,ডঃ সইফুল্লাহ রঙ্গরেথ এলাকার একটি বাড়িতে ঘাঁটি গেড়েছে। পুলিশ, নিরাপত্তাবাহিনী বাড়িটি কর্ডন করে ঘিরে ফেলে। এক সন্ত্রাসবাদী নিহত হয়। তিনি বলেন, আমি ৯৫ শতাংশ নিশ্চিত গুলিযুদ্ধে নিহত জঙ্গি হিজুবলের চিফ অপারেশনাল কম্যান্ডার ডঃ সইফুল্লাহ। আমরা ওর দেহ বের করছি। শনাক্তকরণের জন্য ওর বাড়ির লোকজনকে ডেকে আনা হবে।

এই অভিযান ছোটখাট ব্যাপার নয়, বিরাট বড় সাফল্য বলে দাবি করে তিনি বলেন, পুলিশের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক আছে। তারা কোনও সন্ত্রাসবাদীকে শ্রীনগরের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেবে না।  এটা বিরাট সাফল্য। সংঘর্ষস্থল থেকে ধৃত ব্যক্তি জঙ্গি নয়, তবে সন্দেহভাজন বলে জানান তিনি।

জানা গিয়েছে, নিহত সইফুল্লাহ মির সরকারি  স্কুল শিক্ষকের ছেলে। ২০১০-এ সে পুলওয়ামার ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট থেকে মেডিকেল ইলেকট্রনিক্সে ডিপ্লোমা পায়। পরে শ্রীনগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফর্মেশন টেকনোলজি থেকে ডিগ্রিও অর্জন করে। গ্রামে তার পরিচয় ছিল স্বাস্থ্যকর্মীর। তাকে ডাক্তার বলত গ্রামের লোকজন। সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে সে ডঃ সইফুল্লাহ পরিচয়েই খ্যাত হয়। ২০১৪ –য় সে সন্ত্রাসবাদী দলে যোগ দেয়। উত্তরসূরী রিয়াজ নাইকুর বেগপোরায় নিজের গ্রামে এনকাউন্টারে গুলিতে হত্যার ৫ দিন বাদে তাকে নয়া হিজবুল প্রধান পদে নিয়োগ করা হয়। বেগপোরা যদি নাইকুর গ্রাম হয়, তবে সইফুল্লাহর গ্রাম মালাঙ্গপোরা। সেটাও পুলওয়ামাতেই। যে পুলওয়ামা ২০১৬ থেকেই কার্যত সন্ত্রাসবাদের শক্তিশালী ঘাঁটি।