মুম্বই: ছেলে পাক সেনার হেফাজতে। কার্যত বন্দি দশায় রয়েছে। বুধবার পাক যুদ্ধবিমানকে তাড়া করতে গিয়েই পড়শি দেশে গ্রেপ্তার হয়েছেন বায়ু সেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। গতকাল সারাদিনই সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনায় থেকেছে ভারতীয় বায়ু সেনার এই কমান্ডার। সংবাদমাধ্যমও তাঁর গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনায় সরগরম হয়েছে। পরিস্থিতি এমনই উত্তপ্ত হয়ে উঠে যে বায়ু সেনার কমান্ডারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নেয় সরকারও। ডেকে পাঠানো হয় পাক হাই কমিশনারকেও। ইসলামাবাদ থেকে আলোচনায় বসার কথা বলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমারন খানও। এমন অবস্থায় বন্দি ছেলের নিরাপদ মুক্তির আর্তি শোনা গেল প্রাক্তন এয়ার মার্শালের গলায়। প্রাক্তন মার্শাল আশাবাদী, তাঁর ছেলে নিরাপদেই বাড়ি ফিরবে।
বুধবার পাকিস্তানের পক্ষ থেকে তিনটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করা হয়। একটিতে দেখা যায়, ভারতীয় বায়ু সেনা কমান্ডারের মুখে এলোপাথারি ঘুষি, লাথি মারছে পাকিস্তানিরা। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে পাকিস্তানি সেনা। পরে আরও একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় আসে, যেখানে দেখা যায় চোখ বন্ধ অবস্থায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পাকিস্তানি আর্মি। এরপর আরও একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায় পাকিস্তানিদের নিজের পরিচয় দিচ্ছেন আইএএফ কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। তবে দেশের নিরাপত্তাজনিত কোনও তথ্যই পাক অফিসারদেরকে বলেননি তিনি। এবং পড়শি দেশের সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই অভিনন্দন বলেন, পাকিস্তানের সেনা তাঁর সঙ্গে ভাল ব্যবহারই করছে। তিনি চান, ভারতীয় সেনারা পাকিস্তানি সেনাদের প্রতি এমনই আচরণের নিদর্শন রাখুক। ছেলের এই ব্যাঘ্রবিক্রম দেখে গর্বে বুকের ছাতি চওড়া হয়েছে বাবার।
প্রাক্তন মার্শাল জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে সত্যিকারের একজন সৈনিক। একই সঙ্গে দেশ যেভাবে বীর সন্তানের বাড়ি ফেরা নিয়ে উদগ্রীব হয়ে উঠেছে এবং প্রার্থনায় সামিল হয়েছে তার জন্য দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “বন্ধুরা, তোমাদের উদ্বেগ ও প্রার্থনার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই, আমার ছেলে এখনও বেঁচে আছে। ওকে শৌর্যের সঙ্গে কথা বলতে দেখলাম। ও সত্যিকারের সৈনিক। আমরা সবাই ওর জন্য গর্বিত।” এক বুক আশা নিয়ে ছেলের বাড়ির অপেক্ষায় পিতা আরও বলছেন, “আমি নিশ্চিত, আপনাদের সকলের আশীর্বাদ ওর উপর রয়েছে। ও নিরাপদে বাড়ি ফিরে আসবে। আমি প্রার্থনা করছি, ওর উপর যেন কোনও রকম নিপীড়ন না হয়। এবং ও যেন সুস্থ অবস্থাতেই বাড়ি ফেরে।”