নয়াদিল্লি: প্রতি বছর দীপাবলির সময় একা জঙ্গলে গিয়ে পাঁচদিন কাটাতেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি এমন জায়গায় যেতেন, যেখানে শুধু পরিষ্কার জল থাকত, কোনও মানুষের দেখা মিলত না। একটি জনপ্রিয় ফেসবুক পেজ ‘হিউম্যানস অফ বম্বে’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘অনেকেই জানে না, আমি দীপাবলির সময় পাঁচদিন দূরে কোথাও চলে যেতাম। কোনও এক জঙ্গলে গিয়ে থাকতাম, যেখানে শুধু পরিষ্কার জল পাওয়া যেত, কোনও লোক থাকত না। পাঁচদিন খাওয়ার মতো খাবার নিয়ে যেতাম। আমার সঙ্গে রেডিও বা সংবাদপত্র থাকত না। সেই সময় টিভি, ইন্টারনেট ছিল না। সেই একা থাকার সময় যে শক্তি পেয়েছি, তা এখনও আমাকে জীবন ও জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। অনেকে আমাকে জিজ্ঞাসা করত, কার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছো? আমি জবাব দিতাম, নিজের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি।’ নিজের জীবনের এই অজানা ঘটনার কথা জানিয়ে তরুণদের উদ্দেশে মোদি পরামর্শ দিয়েছেন, ‘আমি সবাইকে বলি, বিশেষ করে তরুণ বন্ধুদের বলব, গতিশীল জীবন ও ব্যস্ততার ফাঁকে কিছুটা সময় নিয়ে ভাবো ও আত্মানুসন্ধান করো। এতে তোমাদের উপলদ্ধি বদলে যাবে। নিজেদের অন্তরকে আরও ভালভাবে বুঝতে পারবে। তোমরা আক্ষরিক অর্থে বাঁচা শুরু করবে। এতে তোমরা আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে এবং অন্যরা তোমার বিষয়ে যা-ই বলুক না কেন, অবিচলিত থাকবে। এই বিষয়গুলি তোমাদের ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। তাই আমি চাই তোমরা সবাই মনে রাখো, তোমরা বিশেষ একজন। আলোর জন্য তোমাদের বাইরে তাকাতে হবে না। সেটা তোমাদের মধ্যেই আছে।’ এই সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ‘হিমালয় থেকে ফিরে আমি উপলদ্ধি করি, অন্যদের সেবার মধ্যে দিয়ে জীবন অতিবাহিত করব। হিমালয় থেকে ফিরে আসার কিছুদিনের মধ্যেই আমি আমদাবাদে যাই। সেই প্রথম কোনও বড় শহরে গিয়ে থাকি। সেখানকার জীবনের গতি অন্যরকম। সেখানে আমার কাকার ক্যান্টিনে তাঁকে মাঝেমধ্যে সাহায্য করার মধ্যে দিয়ে জীবন শুরু করি। এরপর আমি আরএসএস-এর পূর্ণ সময়ের প্রচারক হয়ে যাই। সেই সময় আমি জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষের সঙ্গে কথা বলা এবং নানা ধরনের কাজ করার সুযোগ পাই। আমরা সবাই পালা করে আরএসএস দফতর পরিষ্কার করতাম, সতীর্থদের জন্য চা ও খাবার তৈরি করতাম, বাসন মাজতাম। হিমালয়ে গিয়ে যে মানসিক শান্তি অর্জন করেছি, সেটা নষ্ট হোক চাইনি। সেই কারণেই প্রতি বছর আত্মানুসন্ধান ও জীবনে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য একা জঙ্গলে গিয়ে থাকতাম।’