নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গতকালের রাজ্যসভায় দেওয়া ভাষণ থেকে একটি শব্দ বাদ দেওয়া হল। সচরাচর এমনটা হয় না, একেবারেই বিরল ব্যাপার। বাজেট অধিবেশনের সূচনায় সংসদের দুই কক্ষের যৌথ সিটিংয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ভাষণের জন্য ধন্যবাদজ্ঞাপক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর জবাবি বক্তৃতার একটি শব্দ বাদ দিয়েছেন সভার চেয়ারম্যান এম বেঙ্কাইয়া নাইডু।
রাজ্যসভা সচিবালয় থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজ্যসভার ৬ ফেব্রুয়ারির সন্ধ্যা ৬টা ২০ থেকে ৬টা ৩০ এর মধ্যে অধিবেশনের কিছুটা অংশ সভার কার্যবিবরণী থেকে ছেঁটে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন চেয়ারম্যান।
সংসদের উচ্চকক্ষের গোটা দিনের অধিবেশন পর্ব খতিয়ে দেখে কোনও বিশেষ অংশ আপত্তিকর, নিয়মসঙ্গত নয় দেখলেই নিয়মিত সভার রেকর্ড থেকে বাদ দিতে বলেন বেঙ্কাইয়া। একাধিকবার এটা ঘটেছে,তবে খোদ প্রধানমন্ত্রীর কোনও মন্তব্য বাদ পড়ার নজির সম্ভবত নেই।
জানা গিয়েছে, গতকাল ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার (এনপিআর) পর্ব দৃঢ় ভাবে সমর্থন করে ওই মন্তব্য করেন মোদি। বলেন, দেশের জনসংখ্যা সংক্রান্ত রেজিস্টার বা পঞ্জী আপডেট করার প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়েছে যাতে সরকারি উন্নয়ন কর্মসূচির আইনি প্রাপকদের হাতেই তা তুলে দেওয়ার কাজ আরও ভাল ভাবে করা যায়। এ ব্যাপারে জনবিন্যাস সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য সংযোজনের কাজ চালানো হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বিরোধী কংগ্রেসকে নিশানা করে তিনি অভিযোগ করেন, ওরা আগের অবস্থান পুরোপুরি বদলে ফেলেছে। বলেন, কংগ্রেস ২০১০-এ এনপিআর করেছিল, ২০১৫ সালে তাতে আপডেটও করা হয় ছবি ও আরও কিছু বায়োমেট্রিক তথ্য সংযুক্ত করে। মোদি আরও বলেন, বিরোধীরা সংকীর্ণ, নিজেদের মর্জিমতো রাজনৈচিক ভাষ্যের স্বার্থে এনপিআরের বিরোধিতা করছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবেন না। এটা গরিবের বিরোধিতা।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে চলতি প্রতিবাদ আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য ছড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মোদি। বলেন, যে হিংসা ছড়ানো হল, তাকে আন্দোলনের অধিকার বলা হয়েছে। বারবার সংবিধানের নাম করা হয়েছে। সংবিধান রক্ষার কথা বলে অগণতান্ত্রিক কাজকর্ম আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে।
গতকাল মোদির ভাষণের পর রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা তথা শীর্ষ কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদের বক্তৃতার একটি শব্দও বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন নাইডু। গুলাম নবি বলেছিলেন, কংগ্রেসও পাকিস্তান থেকে আসা নির্যাতিত অভিবাসীদের এদেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার পক্ষপাতী, তবে এজন্য ধর্মের মাপকাঠিতে আইন তৈরি সমর্থন করে না।