সৌমিক সাহা ও ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: করোনা পরিস্থিতিতেও বাড়ছে বাঙালি পড়ুয়াদের লন্ডন যাত্রা। পড়ুয়াদের বিলেত পাড়ির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংস্থার দাবি, ২০১৯-এর তুলনায় ২০২০-২১-এ ইংল্যান্ডে যাওয়ার আবেদনের সংখ্যা বেড়েছে। আশার কথা সাগরের ওপাড় থেকেও। ভারতীয় পড়ুয়ারা ব্রিটেনে গেলেই মিলবে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন। বিধি মতো ১০ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হলেও তার খরচও দিয়ে দেওয়া হবে বলে সূত্রের দাবি।
স্বপ্ন সফল করার হাতছানি। করোনার কারণে বদ্ধ জীবন থেকে শিক্ষা-শিল্প-সংস্কৃতির মুক্ত আকাশে ডানা মেলা। কে না চায়? শহরের বিদেশযাত্রার পরিসংখ্যান বলছে, এমনটা এখন চাইছেন অনেকেই। তাই তো দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা অদ্রিজা মুখোপাধ্যায় অর্থনীতি নিয়ে পড়তে পাড়ি দিচ্ছেন ইংল্যান্ডে।
ছোটবেলা থেকেই অদ্রিজার স্বপ্ন ছিল ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করার। সেই মতোই নিজেকে প্রস্তুত করেছেন। করোনার সাধ্য কী, তাঁকে হার মানায়! কিন্তু ব্রিটেনে পড়তে গেলে করোনার ভ্যাকসিনের কী হবে? বিদেশ বিভুঁইয়ে গিয়ে বিপদে পড়তে হবে না তো? ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস জানিয়েছে, এ নিয়ে বিদেশি পড়ুয়াদের চিন্তার কারণ নেই।
১৮ বছর বা তার ঊর্ধ্বে যে কেউ ব্রিটেনে এলে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাবেন। সে তাঁদের নাগরিকত্ব বা ইমিগ্রান্ট স্টেটাস যাই হোক। ইংল্যান্ডে কাউকে কোভিড ভ্যাকসিনের জন্য অর্থব্যয় করতে হবে না।
লন্ডনের ব্রুনেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিবানী ভাল্লা জানিয়েছেন, গোটা বিশ্বের মতোই ব্রিটেনেও চোখ রাঙাচ্ছে করোনার ডেল্টা স্ট্রেন। চিকিত্সকদের পরামর্শ, ব্রিটেনে গেলে বেশ কিছু সতর্কতা নেওয়া দরকার।
চিকিত্সক দীপ্তেন্দ্র সরকার বলছেন, করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের কারণে ভারত এখনও ব্রিটেন বা ইওরোপিয় ইউনিয়নের লাল তালিকায় রয়েছে। সেই কারণেই ভারত থেকে কেউ ব্রিটেনে গেলেই তাঁকে ১০ দিন নিজের খরচায় থাকতে হবে কোয়ারেন্টিনে। খরচ হবে ১ হাজার ৭৫০ পাউন্ড, ভারতীয় টাকায় যা প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। তবে ব্রুনেল সহ লন্ডনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আশ্বাস, পড়ুয়াকে ওই অর্থ নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে ফিরিয়ে দেওয়া হবে তাঁর ইংল্যান্ডের অ্যাকাউন্টে।
শিবানী ভাল্লা আরও জানিয়েছেন, কোয়ারেন্টিনের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলছেন....ব্রুনেল সহ ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয় এই ব্যবস্থা করেছে। ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলতে হবে। না হলে ব্রুনেলের বিজ্ঞাপন হয়ে যাবে।
এই করোনা পরিস্থিতিতেও তাই বেড়েছে ব্রিটেনযাত্রী পড়ুয়ার সংখ্যা। কারও কাছে ছোটবেলার স্বপ্ন সত্যি হওয়া। কারও সামনে আবার উন্নত শিক্ষার সুযোগ। করোনার আতঙ্ক সরিয়ে এখন বাঙালির কাছে বিলেতেই বসন্ত।