মুম্বই: ঘূর্ণিঝড় ‘তওতে’-র তাণ্ডবে মুম্বই ও গুজরাত উপকূলের মাঝে আরব সাগরে জাহাজ ও বার্জ ডুবে যাওয়ার ঘটনায় এখনও নিখোঁজ অন্তত ৩৮ জন। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে নৌবাহিনী।
গতকাল এক বিবৃতিতে নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১৮৬ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আরব সাগর থেকে এখনও পর্যন্ত ৩৭টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জাহাজ ও হেলিকপ্টারের সাহায্যে তল্লাশি এবং উদ্ধারকার্য চালানো হচ্ছে।
আজ নৌবাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘১৮৮ জন জীবিত ব্যক্তিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের বলি হওয়া ৩৭ জন সাহসী ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আইএনএস কলকাতা জীবিত ও মৃত ব্যক্তিদের দেহ মুম্বইয়ে নিয়ে আসছে। আইএনএস কোচিও ফের উদ্ধার ও তল্লাশির কাজে যোগ দিচ্ছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ ও হেলিকপ্টার নিখোঁজ ক্রু মেম্বারদের খোঁজ করছে।’
পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার বিষয়ে আগাম সতর্কতা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এই বিপত্তি ঘটল, সেটা জানার জন্য উচ্চ-পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগের পক্ষ থেকে যে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল, সেটা মেনে জাহাজ ও ভেসেলগুলিকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কি না, সেটা দেখতে হবে। কোনও গাফিলতির ফলেই এই বিপর্যয় ঘটেছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে।
এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘ঘূর্ণিঝড় তওতে আছড়ে পড়ার সময় ৬০০ জনকে নিয়ে ওএনজিসি-র কয়েকটি ভেসেল উপকূলবর্তী অঞ্চলে ছিল। এই ভেসেলগুলির সমুদ্রে আটকে পড়া, দূরে ভেসে যাওয়া এবং পরবর্তী ঘটনাগুলির জন্যই এতজনের মৃত্যু হয়েছে।’
বার্জ পি-৩০৫ ডুবে যাওয়ার পর এখনও পর্যন্ত যাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, তাঁরা ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। মুম্বইয়ে পৌঁছনোর পর অনেকেই বলছেন, তাঁরা বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। ওএনজিসি-র এক কর্মী জানিয়েছেন, ‘বার্জের অবস্থা ভয়াবহ ছিল। বেঁচে ফিরতে পারব ভাবিনি। সাত-আট ঘণ্টা সাঁতার কেটে কোনওরকমে প্রাণ বাঁচাতে পেরেছি। তারপর আমাকে উদ্ধার করে নৌবাহিনী।’
আইএনএস কলকাতা, আইএনএস কোচি ছাড়াও উদ্ধারকার্য চালাচ্ছে আইএনএস তলোয়ার। কাউকে জীবিত উদ্ধারের চেষ্টার পাশাপাশি মৃতদেহ নিয়ে আসার কাজও চালাচ্ছে জাহাজগুলি।