নয়াদিল্লি: মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করল ইন্টারপোল। ভাগ্নে নীরব মোদির সঙ্গে হাত মিলিয়ে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি) থেকে নেওয়া ১৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ ফেরত না দিয়ে দেশত্যাগে অভিযুক্ত মেহুল। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই ভারত থেকে চম্পট দেন তিনি। দেশ ছাড়ার পর কয়েকটি বিদেশি রাষ্ট্র ঘুরে শেষ পর্যন্ত অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব নেন মেহুল।
তাঁর বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস চেয়ে সিবিআইয়ের আবেদনের বিরোধিতা করেন মেহুল। সূত্রের খবর, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে সওয়াল করেন তিনি, পাশাপাশি ভারতে কারাগারগুলির অবস্থা, ব্যক্তিগত সুরক্ষা, স্বাস্থ্যের মতো প্রসঙ্গও তোলেন। রেড কর্নার নোটিস জারির বিষয়টি ওঠে ইন্টারপোলের পাঁচ সদস্যের কমিটিতে। কমিশন ফর কন্ট্রোল অব ফাইলস নামে সেই কমিটি সিবিআইয়ের রেড কর্নার নোটিস জারির আবেদনে সায় দেয় বলে সূত্রের খবর। সিবিআই মুখপাত্র অভিষক দয়াল বলেন, সিবিআইয়ের আবেদন মেনে মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস দিয়েছে ইন্টারপোল।
রেড কর্নার নোটিস হল পলাতক লোকজনের জন্য এক জাতীয় আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা যার জোরে ইন্টারপোল তার সদস্য দেশগুলিকে সেইসব লোককে গ্রেফতার বা আটক করার আবেদন করতে পারে।
অভিযোগ, জাল লেটার্স অব আন্ডারটেকিংস ও ফরেন লেটার্স অব ক্রেডিটের মাধ্যমে প্রতারণা করা হয়েছে পিএনবি-কে।
পিএনবি জালিয়াতি কেলেঙ্কারিতে গত মাসে নীরব মোদি ও মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে পৃথক চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। তাতে তাদের অভিযোগ, মেহুল ৭০৮০.৮৬ কোটি টাকা জালিয়াতি করেছেন, যার ফলে দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্কিং জালিয়াতি হতে পেরেছে। আর নীরব মোদি ৬০০০ কোটি টাকা আত্মসাত্ করেছেন বলে অভিযোগ। এছাড়া মেহুলের কোম্পানিগুলিকে দেওয়া ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি জালিয়াতির অভিযোগও সিবিআই তদন্তের পরিধির মধ্যে আছে।
সরকারি কর্তাদের দাবি, জাল লেটার্স অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং ও লেটার্স অব ক্রেডিটের মাধ্যমে দেওয়া গ্যারান্টি ব্যবহার করে বিভিন্ন ভারতীয় ব্যাঙ্কের বিদেশি শাখা থেকে নিজেদের সংস্থার মাধ্যমে ঋণ নিয়েছেন নীরব, মেহুল। কিন্তু তা শোধ করেননি, ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব মালিকানাধীন ব্যাঙ্কের বিপুল লোকসান হয়েছে।
লেটার অব আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে কোনও ব্যাঙ্ক বিদেশে শাখা আছে এমন ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলিকে লোনের আবেদনকারীকে স্বল্পমেয়াদে ঋণ দানের ক্ষেত্রে গ্যারান্টি দেয়।
সরকারি কর্তাদের দাবি, গোকুলনাথ শাস্ত্রী নামে জনৈক ব্যাঙ্ককর্মী সুইফট প্ল্যাটফর্ম নামে ইন্টারন্যাশনাল মেসেজিং সিস্টেম ব্যবহার করে অর্থ ট্রান্সফারের নির্দেশ দেন, পিএনবির অভ্যন্তরীণ সিস্টেমে তা নথিভুক্ত করেননি, এভাবে ব্যাঙ্কের নজরদারি এড়িয়ে গিয়েছেন।